কলকাতা: হৈমন্তীর ফ্ল্যাটের সামনে থাকা আবর্জনা থেকে উদ্ধার ২০১৪ টেট পাশ করা নট ইনক্লুডড চাকরিপ্রার্থীর তালিকা! তার মধ্যে পাঁচ জন চাকরি প্রার্থীর নাম, রোল ও আইডি নম্বর সামনে এসেছে ইতিমধ্যেই। অবাক করার মতো বিষয়, এই নথিপত্রের সবটাই পড়েছিল আবর্জনায়।
শুধু তাই নয়, হৈমন্তী-গোপালের ফ্ল্যাট থেকে পাওয়া ছেঁড়া কাগজে লেখা ছিল মিঠুন মাইতি নামে এক ব্যক্তির নাম। এই মিঠুন ২০১৪ টেট পাশ করে ছিলেন। দু'বার ইন্টারভিউও দিয়েছিলেন। কিন্তু চাকরি পাননি। হৈমন্তী-গোপালের ফ্ল্যাটে নট নন ইনক্লুডড চাকরিপ্রার্থীর তালিকায় লেখা রয়েছে এই মিঠুন মাইতির ফোন নম্বরও।
আরও পড়ুন: ভুল পকেটে ফোন রাখেন? হারাতে পারেন প্রজনন ক্ষমতা, জেনে নিন কোন পকেটে রাখা উচিত ফোন
মিঠুন অবশ্য জানিয়েছেন, আরমান গাঙ্গুলি বা গোপাল দলপতি নামের কাউকেই তিনি চেনেন না। তাঁর অর্থ সামর্থ্যও তেমন নয় যে লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে চাকরি কিনতে পারেন। কিন্তু, তাহলে প্রশ্ন, মিঠুন মাইতির নথিপত্র, ফোন নম্বর কী ভাবে পৌঁছেছিল গোপালদের কাছে? গোটা বিষয়টা নিয়েই অবশ্য চূড়ান্ত অবাক ওই চাকরিপ্রার্থী। মিঠুন মাইতি নামের ওই ব্যক্তি হুগলির বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি প্যারা টিচার হিসাবে কাজ করেন। কোনও স্থায়ী চাকরি নেই।
এখন প্রশ্ন, তাহলে কি মিঠুনের জায়গায় অন্য কেউ টাকা দিয়ে চাকরি করছেন? নাকি গোপাল দলপতি এভাবেই চাকরি প্রাথীর্দের ফোন নম্বর জোগাড় করে রাখতেন। পরে তাঁদর ফোন করে টাকার বদলে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলতেন। যদিও তাঁকে গোপাল কখনও ফোন করেননি বলেই দাবি মিঠুনের।
গোপাল-হৈমন্তীর বন্ধ ফ্ল্যাটের আবর্জনা থেকে উদ্ধার হয়েছে একাধিক ৯ ডিজিটের নম্বরের তালিকা। পাশে রোল নম্বর-এর মতো নম্বর। এছাড়া, ২০১৪ টেট পাশ নন ইনক্লুডড চাকরি প্রার্থী নামের একটি তালিকা রয়েছে আবর্জনা থেকে উদ্ধার হওয়া কাগজপত্রের মধ্যে। তাহলে কী এটা রেকমেন্ডেশন লিস্ট! কারণ, ওই লিস্টে থাকা কয়েকজনের চাকরি হয়েছে বলে দাবি, ২০১৪-এ টেট পাশ করে ধর্না মঞ্চে থাকা প্রতিনিধি অচিন্ত্য সামন্ত।
বেনিয়ম করে চাকরি পাওয়া প্রার্থীদের টাকা গিয়েছে গোপাল দলপতি ও হৈমন্তী গাঙ্গুলির অ্যাকাউন্টে। এমনই অভিযোগ করেছিলেন টেট দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত কুন্তল ঘোষ। যদিও গোপাল দলপতি এবং হৈমন্তীর মা দুজনেই সেই কথা অস্বীকার করেছেন। কুন্তলের অভিযোগের সত্যাসত্য তদন্ত করে দেখছে সিবিআই।
যদিও ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে, হৈমন্তী গাঙ্গুলির বিউটি পার্লার চিনারপার্কে খোলার পিছনে গোপাল দলপতি ৬০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছিল। এমনকি, হৈমন্তীর ফ্ল্যাট বা বিলাসবহুল জীবনযাপন, কোম্পানি শুরু সব কিছুতেই টাকা দিয়েছিল গোপাল দলপতি, খবর সিবিআই সূত্রের। তাহলে কী নিয়োগ দুর্নীতির কালো টাকা সাদা করার জন্যই গোপাল বিভিন্ন খাতে ব্যাবসায় খরচ করতেন? উত্তর খুঁজছেন গোয়েন্দারা।
ARPITA HAZRA
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।