প্রসঙ্গত দীর্ঘ টানাপোড়নের পর গ্রামাঞ্চলে গরীব মানুষের বাড়ি তৈরির জন্য প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় কেন্দ্রীয় বরাদ্দ রাজ্য পেয়েছে। এরপরই রাজ্য সরকার এই প্রকল্প রূপায়ণকে ত্রুটিমুক্ত করতে তিনদফা চেকিং-সহ একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়েছে। এরপর পঞ্চায়েত দফতর থেকে ২১ জেলায় একজন করে আইএএস ও ডব্লউবিসিএস পদমর্যাদার আধিকারিক নিয়োগ করাও হয়েছে। যাদের কাজই হবে উপভোক্তাদের তালিকা তৈরির কাজে বেনোজল ঢুকছে কিনা নজরদারি করা। নাম যাচাইয়ের কাজে ত্রুটি থাকলে তা জেলাশাসকের নজরে সংশোধন করার জন্য উপযুক্ত পরমার্শ দেওয়া।
advertisement
আরও পড়ুন- সরকারি কর্মীদের জন্য রাজকোষ খুলে দেবে মোদি সরকার! সপ্তম বেতন কমিশন ঘিরে জল্পনা
যদিও তালিকা যাচাই করা নিয়ে রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলার গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় চাপা উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। আবাস প্লাস তথ্য ভান্ডারে নথিভুক্তদের নাম নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাচাই করে উপভোক্তাদের তালিকা তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে আশাকর্মী,অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, প্রাণী বন্ধু, ভিলেজ পুলিশ ও স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত কর্মীদের নিয়ে দল গঠন করতে বলা হয়েছে। প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে পাঁচ থেকে দশটি দল করা হয়েছে। শনিবারই তাদের প্রশিক্ষণ শেষ হয়েছে। রবিবার থেকে কাজ শুরুর কথা। মূলত ‘আবাস প্লাস’ পোর্টালে নথিভুক্ত নাম থেকে উপভোক্তাদের তালিকা তৈরির জন্য সমীক্ষা চালাবে। তাদের কাজই হবে নথিভুক্ত নামের ক’জন আইন মাফিক এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার যোগ্য। এটাই প্রাথমিক রিপোর্ট হিসেবে গণ্য হবে।
কিন্তু আশা কর্মীরা এই কাজে অংশ নিতে নারাজ। ইতিমধ্যেই জেলাগুলিতে আশা কর্মীদের সংগঠন এই কাজ না করার জন্য আপত্তি জানিয়ে জেলা প্রশাসনকে স্মারকলিপি দিয়েছে। গত সোমবারই তারা কেন্দ্রীয়ভাবে স্বাস্থ্য ভবনে এসে তারা তাদের আপত্তির কথা জানিয়ে দেয়। তাদের বক্তব্য, এই কাজ নিরপেক্ষভাবে করা সম্ভব নয়। গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে নথিভুক্ত নামের যে তালিকা দেওয়া হবে তাতেই কাদের নাম আবশ্যিকভাবে তালিকায় রাখতে হবে তার ইঙ্গিত দেওয়া থাকে। এ ছাড়া এই কাজ করতে গিয়ে তাদের নির্দিষ্ট কাজ বন্ধ হয়ে যাবে। এজন্য তাদের অতিরিক্ত কোনো আয় হবে না। সোমবারই এই তালিকা নিয়ে কোচবিহার, ডায়মন্ডহারবার, বসিরহাটে অশান্তি হয়েছে। আশা কর্মীরা এই কাজে অংশ না নেওয়ার কথা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে।
অশান্তি আভাস পাওয়া মাত্রই রাজ্যের পঞ্চায়েত সচিব পি উল্গানাথন জেলাশাসকদের গত সোমবারই জানিয়ে দিয়েছেন, গ্রাম পঞ্চায়েতে উপভোক্তাদের নাম বাড়ি বাড়ি গিয়ে শুধুমাত্র যাচাই করবে এই দল। তারা নতুন কোনও সংযুক্ত করতে বা কারও নাম তালিকা থেকে বাদ দিতে পারবে না। এব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। দেখতে হবে প্রকৃত ব্যক্তি যেন এর সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হন। মূল্যায়ন করবে জেলা প্রশাসন। এক্ষেত্রে গ্রাম পঞ্চায়েত ও ব্লক কমিটিরও বিশেষ ভূমিকা থাকবে না। এই কাজ তদরকির জন্য রাজ্য স্তরের সিনিয়র আধিকারিকদের পাঠানো হচ্ছে।