বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের পর্যবেক্ষণ আবেদনকারী শিক্ষামিত্রদের সঙ্গে শোষণমূলক আচরণ করেছে রাজ্যের শিক্ষা দফতর। দু’দশক ধরে শিক্ষা মিত্রদের স্বল্প বেতনে সাধারণ শিক্ষকদের মতো কাজ করানো হয়েছে। সাধারণ শিক্ষকদের দেওয়া নূন্যতম বেতনের থেকেও যা অনেক কম। ডিভিশন বেঞ্চের আরও পর্যবেক্ষণ, আবেদকারীদের কর্মজীবনের বেশিরভাগ অংশ সর্ব শিক্ষা মিশন প্রকল্পে দেওয়ার পরও তাদের কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয় এবং এর ফলে অন্যায়ভাবে অর্থনৈতিক কষ্টের মধ্যে পড়তে হয় শিক্ষামিত্রদের।
advertisement
আবেদনকারী আইনজীবী শামিম আহমেদ জানান, শিক্ষা মিত্রদের কাজ বাতিল করার রাজ্যের নির্দেশিকার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে হাই কোর্টে মামলা করা হয়। ২০২৩ সালের ২৬ এপ্রিল তৎকালীন বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের একক বেঞ্চ রাজ্যের ওই সিদ্ধান্তকে খারিজ করে দেয়। একক বেঞ্চের রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করে রাজ্য। শুক্রবার ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের আবেদন খারিজ করে শিক্ষামিত্রদের ৬০ বছর পর্যন্ত কাজে বহাল থাকার নির্দেশ দেয়।
উল্লেখ্য সর্ব শিক্ষা মিশন প্রকল্পের মাধ্যমে ২০০৪ সালে শিক্ষামিত্র নিয়োগ করে রাজ্য। তাঁদের মূল কাজ ছিল, পিছিয়ে পড়া এবং স্কুলছুট ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা। এই কাজের জন্য ২৪০০ টাকা বেতন পেতেন তাঁরা। ২০১৩ সালে রাজ্য নতুন নির্দেশিকা দিয়ে শিক্ষামিত্রদের পদ পরিবর্তন করে তাঁদের স্বেচ্ছাসেবক ঘোষণা করে। সাধারণ শিক্ষকদের মতো ৬০ বছর পর্যন্ত কাজ করার বা পার্শ্ব শিক্ষক ও শিক্ষা বন্ধুদের যে সুযোগ সুবিধে দেওয়া হত, শিক্ষামিত্রদের ক্ষেত্রে তা বন্ধ করে দেয় রাজ্যের শিক্ষা দফতর। রাজ্যের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় শিক্ষামিত্রদের একটা অংশ।