অন্যদিকে ইতিমধ্যেই কেন্দ্র জানিয়ে দিয়েছে পঞ্চায়েতে কেন্দ্রীয় প্রকল্প খরচে অনিয়মের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বকেয়া টাকা দিতে নারাজ দিল্লি। গত সপ্তাহে বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রীয় গ্রামান্নোয়ন মন্ত্রকের মহাত্মা গান্ধি গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্পের অধিকর্তা ধরমবীর ঝা রাজ্যের পঞ্চয়েত সচিব পি উল্গানাথনকে চিঠি দিয়ে এই অবস্থানের কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: 'এই জ্ঞান থাকা উচিত!' মমতাকে বামেদের থেকে শেখার পরামর্শ বীরভূমের তৃণমূল নেতার
advertisement
রাজ্যে গ্রামান্নোয়ন প্রকল্পে খরচের অনিয়ম নিয়ে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল যে সব প্রশ্ন তুলেছিল তা কার্যকর করা নিয়ে রাজ্য সরকারের অ্যাকশন টেকন রিপোর্টে দিল্লি যে সন্তুষ্ট নয় তা পরিষ্কার করে দিয়েছে এই চিঠিতে। তারা প্রিতিটি খরচের অনিয়মের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার কি ব্যবস্থা নিয়েছে তা নিয়ে বিশদ রিপোর্ট চাইছে। ১০০ দিনের গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্পের অধিকর্তার সাফ কথা, যথাযথ প্রক্রিয়া না মেনে যেসব কাজে খরচ করা হয়েছে তার সমস্ত টাকা উদ্ধার করতে হবে। প্রসঙ্গত রাজ্য সরকার প্রায় ২ কোটি টাকা ভুয়ো খরচ হয়েছে বলে কেন্দ্রের কাছে পাঠানো অ্যাকশন টেকন রিপোর্টে উল্লেখ করেছে।
চিঠিতে কেন্দ্রীয় অধিকর্তা পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল বাংলায় এসে মাটি ফেলার কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল। সেই সব কাজে খরচ হওয়া সমস্ত টাকা উদ্ধার করতে হবে। এই কাজে যে সব সরকারি কর্মচারি বা পঞ্চায়েত কর্মী টাকা আত্মসাৎ করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নিতে হবে। কেন্দ্রের মতে, বর্তমান রাস্তার উপর মাটি ফেলার নাম করে তহবিল তছরুপ করা হয়েছে। অন্যদিকে ১০০ দিনের গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্প সহ রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রাম উন্নোয়নে কেন্দ্রীয় অর্থ আদায়ের জট খুলতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিং মন্ত্রী পর্যায়ে আলোচনায় বসতে সম্মত হয়েছেন। নবান্ন সূত্রের খবর, গত ডিসেম্বর থেকে রাজ্যে ১০০ দিনের গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্পে বরাদ্দ বন্ধ করে রেখেছে। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা সহ প্রায় সব কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজই অচল হয়ে পড়েছে বরাদ্দ না দেওয়ায়। সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১০০ দিনের গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্পের জব কার্ড হোল্ডারদের বিকল্প কাজ দিতে বিভিন্ন দফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন।
রাজ্যে জব কার্ড হোল্ডারের সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। এরা সবই আনস্কিলড লেবার বা অদক্ষ শ্রমিক। মূলত ১৬ টি সরকারি দফতর থেকে এই জবকার্ড হোল্ডার অদক্ষ শ্রমিকদের বিকল্প কাজের সুযোগ করে দেওয়া হবে। গত মে মাস থেকে এই দফতরগুলি ২৮ লক্ষ ৪৪ হাজার জবকার্ড হোল্ডারকে গড়ে ১৮ দিন কাজ দেওয়া হয়েছে। কারা কাজ পেয়েছেন, কারা এখনও পাননি তা নিয়ে নিশ্চিত হতে রাজ্য সরকার এবার পঞ্চায়েতের পোর্টালকে হাতিয়ার করতে চায়। এই পোর্টালেই জব কার্ড হোল্ডারদের তালিকা রয়েছে। কাজ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের নাম পোর্টালে নথিভুক্ত করতে হবে। মুখ্যসচিব এব্যাপারে জেলা শাসকদের সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। লক্ষ্য হল, কেন্দ্রের বঞ্চনা সত্ত্বেও কত জব কার্ড হোল্ডারকে রাজ্য সরকার বিকল্প কাজের সুযোগ করে দিচ্ছে তার একটা তথ্য ভান্ডার তৈরি করে দেওয়া।