২১-এর কঠিন যুদ্ধ জিততে পারলেও তিনি যে বাংলার কৃষকদেরও উপুর করে সাহায্য করবেন, তা যেন ইস্তাহারেই স্পষ্ট করার চেষ্টা করলেন তৃণমূল নেত্রী। বিজেপি যখন প্রতি মুহূর্তে বাংলার কৃষকদের 'কিষাণ সম্মান নিধি' প্রকল্প থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ তুলে মমতার বিরুদ্ধে সরব, তখন ইস্তেহার প্রকাশ করেই তিনি যেন বলতে চাইলেন, মোদি নয়, তিনিই আসলে কৃষক-বন্ধু।
advertisement
ভোট প্রচারে একাধিক বার বাংলায় এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে 'কিষাণ সম্মান নিধি' রাজ্যে চালু করতে না দেওয়া নিয়ে বিঁধেছেন। মোদির দাবি, কৃষকদের জন্য কথা বললেও, কাজের বেলা মমতার সরকার কেন্দ্রীয় প্রকল্পকে পর্যন্ত আটকে রেখেছে। কারণ, যদি এই টাকা কৃষকদের কাছে চলে যায় এবং মোদির জয়জয়কার হয়, তাহলে তো তাদের রাজনীতিই শেষ হয়ে যাবে। তাই তারা কৃষকদের পকেটে টাকা পৌঁছতে দেয়নি। যদিও বরাবর মোদির অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
গত জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি রাজ্যে চালু করায় সম্মতিও দিয়েছে রাজ্য সরকার। নবান্নে নিজেই একথা ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, রাজ্যের প্রায় ২২ লক্ষ কৃষক 'কিষাণ সম্মান' প্রকল্পে সহায়তা পাওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের পোর্টালে আবেদন করেছিলেন। কেন্দ্র এত দিন আবেদনকারীদের তালিকা রাজ্যকে দেয়নি। তাই কৃষকরা বঞ্চিত হয়েছেন। কেন্দ্র আবেদনকারীদের তথ্য দিলে রাজ্য তা যাচাই করে কেন্দ্রকে পাঠাবে। তার পরেই ওই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন আবেদনকারী কৃষকরা।
কেন্দ্রীয় সরকারের ওই প্রকল্প অনুযায়ী, ২ একর জমির মালিক এমন কৃষকদের হাতে বছরে তিন দফায় মোট ৬ হাজার টাকা সরাসরি পৌঁছে দেবে কেন্দ্র। অন্যদিকে, 'কৃষক বন্ধু' প্রকল্পে বছরে ৬ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য পান কৃষকরা। পাশাপাশি, ১৮ থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত কোনও কৃষক মারা গেলে পরিবারবে ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য করে সরকার। এছাড়াও শস্যবিমা যোজনার ১০০ শতাংশ টাকাই দেয় রাজ্য। বার্ষিক এই ৬ হাজারই বাড়িয়ে এবার ১০ হাজার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী।