ইউজিসি-র জারি করা এই গাইডলাইনে পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি সোমবার বৈঠকে আবারও সেই নির্দেশিকা পুনর্বিবেচনার আর্জি রাখেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। যদিও রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের তরফে আলাদা করে সুপ্রিম কোর্টে কোনও মামলা না করা হলেও ওয়েবকুপার করা মামলাতে রাজ্যকেও রাখা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ওয়েবকুপার সভাপতি কৃষ্ণকলি বসু বলেন, "আমরা অনেকদিন ধরেই অপেক্ষা করলাম। মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রী রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। কিন্তু ইউজিসি-র তরফে যে গাইডলাইন জারি করা হয়েছে, তার পুনর্বিবেচনা বা বাতিলের কোনও ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না ইউজিসি-র তরফে। তাই আমরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছি। আশা করছি শুক্রবার এই মামলার শুনানি হবে।"
advertisement
জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহেই ইউজিসি-র তরফে গাইডলাইন জারি করে চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা নিতে পারে বলে জানানো হয়েছিল। অনলাইন-অফলাইন এবং অনলাইন ও অফলাইন-- এই তিনটি মাধ্যমের মধ্যে যে কোনও একটি মাধ্যমের সাহায্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা নিতে পারে। ইউজিসি-র তরফে এই গাইডলাইন জারি করার পরপরই শুরু হয় বিতর্ক। কেন না তার আগেই রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতর গত ২৯ এপ্রিল জারি করা ইউজিসি-র গাইডলাইনের নিরিখে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে পরীক্ষা নিয়ে অ্যাডভাইজারি পাঠিয়েছিল। অ্যাডভাইজারিতে ইউজিসির তরফেই দেওয়া ফর্মুলা ৮০-২০ মেনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে ছাত্র-ছাত্রীদের মূল্যায়ন করতে বলা হয়েছিল। অর্থাৎ ৮০% নম্বর আগের সেমিস্টারগুলির মধ্যে থেকে পাওয়া সব থেকে বেশি নম্বরকে ফাইনাল সেমিস্টারের যোগ করতে হবে এবং বাকি ২০ শতাংশ নম্বর ইন্টারনাল অ্যাসেসমেন্টের নিরিখে যোগ করে চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের মূল্যায়ন করতে হবে।
রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতরের অ্যাডভাইজারি মেনে ইতিমধ্যেই রাজ্যের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় মূল্যায়ন প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে। কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার ছাত্রছাত্রীদের ফলাফলও প্রকাশ করে দিয়েছে। যদিও ইউজিসির তরফে জারি করা এই গাইডলাইন নিয়ে রাজ্যের তরফে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই রাজ্যপালের সঙ্গেও বৈঠক করেন। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর রাজ্যপালের তরফে ইউজিসি-র জারি করা গাইডলাইন নিয়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হলেও তা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী-রাজ্যপাল কার্যত ট্যুইট যুদ্ধ হয়। এ প্রসঙ্গে ওয়েবকুপার সভাপতি কৃষ্ণকলি বসু আরও বলেন, "শিক্ষামন্ত্রী রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কিন্তু তারপরেও রাজ্যপালের তরফে এখনও পর্যন্ত কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা আমরা জানতে পারিনি। রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীদের সুরক্ষাটাই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আশা রাখছি সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ জানাবে।"
SOMRAJ BANDOPADHYAY
