বগটুইকাণ্ডে নিহতদের পরিবারের অনেকেই এ বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির হয়ে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে দুজন স্বজনহারা ভোটে জিততে পারেননি। তৃণমূল প্রার্থীদের কাছে তাঁরা পরাজিত হয়েছেন। অন্য দিকে, নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন হাওড়ার আমতার নিহত ছাত্রনেতা আনিস খানের দাদা, সিপিএম প্রার্থী সামসুদ্দিন খান। পঞ্চায়েতে বিরোধীরা জয়গা করতে পারল না শীতলকুচিতেও।
আরও পড়ুনঃ গণনার রাতে অশান্ত ভাঙড়! পুলিশ-ISF সংঘর্ষে মৃত ৩, গুলিবিদ্ধ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার
advertisement
২১ মার্চ ২০২২, ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে রামপুরহাট বগটুই মোড়ে বোমা মেরে খুন করা হয় বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখকে। খুনের বদলা নিতে বগটুই গ্রামে ১০ টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরদিন সকালে আটজনের পোড়া মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তারপর, হাসপাতালে মারা যান আরও দুজন।
সেই বগটুইয়ের ঘটনার অন্যতম সাক্ষী ছিলেন মিহিলাল শেখ। মিহিলালের পরিবার থেকে কয়েক জন চলতি বছর বিজেপির টিকিটে পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী হয়েছিলেন। মিহিলালের দিদি মেরিনা বিবি বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের বগটুই গ্রামের আসনে বিজেপির প্রার্থী হন। তিনি তৃণমূলের কাছে পরাজিত হয়েছেন। বগটুইকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছিলেন ডলি বিবি। তাঁর পুত্রবধূ সীমা খাতুন এ বার বিজেপির টিকিটে রামপুরহাট-১ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির আসনে দাঁড়িয়েছিলেন। ওই ব্লকের তৃণমূল প্রার্থীর কাছে তিনি হেরে গিয়েছেন।
এক বছর পেরিয়ে গিয়েছে আনিস খানের মৃত্যুর। ২০২২ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি হাওড়ার সারদা গ্রামের বাসিন্দা আনিসের বাড়িতে গিয়েছিল পুলিশ। আটকের সময় তিন তলা থেকে পড়ে মারা যান তিনি। আনিসের পরিবার পুলিশের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তোলে। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। সিবিআই তদন্তের দাবি মেটেনি। ছেলের মৃত্যুর বিচার চাইতে জনতার কাছে হাজির হয়েছিলেন ছাত্রনেতা আনিস খানের পরিবার।
আরও পড়ুনঃ এমনও হয়! মাত্র ১ ভোটে হারলেন আলিপুরদুয়ারের জেলা বিজেপি সভাপতি
আমতা-২ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির ৪১ নম্বর আসনে সিপিএমের টিকিটে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন আনিস খানের দাদা সামসুদ্দিন। তাঁর বিপরীতে তৃণমূল প্রার্থী ছিলেন কলিম আলি খানকে। মঙ্গলবার ফল প্রকাশের পর দেখা গেল তৃণমূল প্রার্থীর কাছে হেরে গিয়েছেন সামসুদ্দিন। আনিসের মামা, সাবির খানও সিপিএমের টিকিটে আমতা-২ ব্লকের কুশবেড়িয়ার ১৯৬ নম্বর বুথে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁর বিপরীতে তৃণমূল প্রার্থী ছিলেন বিদায়ী বোর্ডের উপপ্রধান হাসেম খান। হাসেমের কাছে পরাজিত হয়েছেন সাবিরও।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের সময় রাজনৈতিক হিংসার ঘটনায় শিরোনামে ছিল কোচবিহারের শীতলকুচি। সিএপিএফের গুলিতে মৃত্যু হয় ৪জনের। সেই ভোটে বিজেপি প্রার্থীকে জিতিয়ে দিলেও পঞ্চায়েত ভোটে তাঁদের থেকে কার্যত মুখ ফিরিয়ে নিল কোচবিহারের ‘অভিশপ্ত শীতলকুচি’র বাসিন্দারা। হাজার চেষ্টা করেও সেখানে পদ্মফুল ফোটাতে পারল না বিজেপি। ৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতেই জয় তৃণমূলের।