একইসঙ্গে পুলিশ জানিয়েছে, বার বার বাড়িতে চিঠি পাঠিয়ে অভিনেতাকে তলব করা হলেও কখনই উত্তর দেননি তিনি ৷
স্টিয়ারিংয়ে হাত দিলে বেপরোয়া গতিই পছন্দ পর্দার নায়ক বিক্রমের।বিক্রমের গাড়ি সম্বন্ধে কয়েকটি তথ্য,
মডেল - টয়োটা করোলা
নম্বর - WB 12C 9755
- গাড়ির মালিকানা বিক্রমের নামে নয়
- তা গুরমন অটোমোবাইল প্রাইভেট লিমিটেডের নামে কেনা
advertisement
- ১৩ জুন, ২০১৪ সালে গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন
২৯ এপ্রিল রাতে, বেপরোয়া গতি প্রাণ কেড়েছিল সোনিকার। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি এমনটাই। গত চার মাসে বিক্রমের গাড়ি চালানোর রেকর্ড দেখলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবিই আরও জোরালো হচ্ছে। গত চার মাসে বেপরোয়া গতির জন্য কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় জরিমানা করা হয় বিক্রম চট্টোপাধ্যায়কে।
প্রথমবার ট্রাফিক আইনভঙ্গ
১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৪
বিকেল ৩.৩৩
ডায়মন্ডহারবার রোড ও রিমাউন্ট রোড ক্রসিংয়ে, ওয়াটগঞ্জের কাছে ট্রাফিক আইন ভাঙেন অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায়।
দ্বিতীয়বার ট্রাফিক আইনভঙ্গ
৮ নভেম্বর, ২০১৬
এক্ষেত্রে স্থান না জানা গেলেও, বিক্রমের বিরুদ্ধে ফের ট্রাফিক আইন ভঙ্গের অভিযোগ ওঠে।
তৃতীয়বার ট্রাফিক আইনভঙ্গ
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭
বিকেল ৫.৪৭
এবার, আলিপুর রোড - গোবিন্দ আঢ্যি রোডে ট্রাফিক আইন ভাঙার অভিযোগ ওঠে বিক্রমের বিরুদ্ধে।
চতুর্থবার ট্রাফিক আইনভঙ্গ
২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭
সন্ধে ৬.৪৬
এবার এজেসি বোস রোড, প্রিটোরিয়া স্ট্রিট ও লি রোড এলাকায় বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর অভিযোগ ওঠে ওই অভিনেতার বিরুদ্ধে।
পঞ্চমবার ট্রাফিক আইনভঙ্গ
৫ এপ্রিল, ২০১৭
দুপুর ২.৫৮
দেশপ্রাণ শাসমল রোড ও চারুচন্দ্র অ্যাভিনিউ এলাকায় ফের ট্রাফিক আইন ভাঙেন
বিক্রম যেসব রাস্তায় ট্রাফিক আইন ভাঙেন, সেখানে দুপুর থেকে সন্ধের মধ্যে চূড়ান্ত ব্যস্ততা থাকে। সেসময় সতর্ক হয়েই গাড়ি চালানোটাই দস্তুর। তা সত্ত্বেও বেপরোয়া গতির জন্য জরিমানা। পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, প্রথমবার জরিমানা দিলেও, বাকি চারটি ক্ষেত্রে তিনি তা এড়িয়ে গিয়েছেন।
অন্যদিনই, ১২ ঘণ্টায় দ্বিতীয়বার টালিগঞ্জ থানায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিক্রম চট্টোপাধ্যায়কে ডেকে পাঠিয়েছে পুলিশ ৷ এদিন অভিনেতা বেলা ১২টার নাগাদ নিজের আইনজীবীদের নিয়ে থানায় পৌঁছান ৷
সোনিকা রহস্য মৃত্যুর তদন্ত সিট গঠন করেছিল টালিগঞ্জ থানা। দুর্ঘটনার রাতে কী হয়েছিল? পার্টিতে বিক্রম মদ্যপান করেন কি? বিক্রম ও সোনিকার বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ৷ শুক্রবার রাতে তাঁরা বিক্রম-সনিকার সঙ্গে ছিলেন। জানতেই জিজ্ঞাসাবাদ ওই বন্ধুদের। ডাকা হয় বিক্রমকেও। মঙ্গলবার গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বিক্রমকে ৷ জিজ্ঞাসাবাদেই চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি বিক্রমের, ‘মদ্যপান করলেও মাতাল হইনি’ ৷
মৃত্যুর ১১ দিন পরও সোনিকা-বিক্রমের গাড়ি দুর্ঘটনা ঘিরে বহু প্রশ্ন। গত ২৯ এপ্রিল পার্টিতে উপস্থিত বিক্রম-সোনিকার বন্ধুদের কথায় ধোঁয়াশা আরও বাড়ছে। প্রশ্ন উঠছে, গাফিলতি ঢাকতে কি পুলিশকে মিথ্যে বলেছেন বিক্রম? সাংবাদিক সম্মেলনেও তাঁর দাবি ঘিরে বহু প্রশ্ন। এসব প্রশ্নের উত্তর পেতেই টালিগঞ্জ থানায় ডেকে পাঠিয়ে জেরা করা হল বিক্রম চট্টোপাধ্যায়কে।
টালিগঞ্জ থানায় চলে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ ৷ আইনজীবীকে নিয়ে থানায় যান বিক্রম ৷ ঘটনার দিন দুটি পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন বিক্রম ৷ দুটি পার্টিতে থাকা ২০-২৫ জনের তালিকা তৈরি করছে পুলিশ ৷
এর আগে বিক্রম-সোনিকার বন্ধু অভিনেতা অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন দুর্ঘটনার রাতে মদ খেয়েছিলেন অভিনেতা বিক্রম চট্টোপাধ্যায় ৷ কলকাতা পুলিশের তদন্তে একেবারেই খুশি নন মডেল সোনিকা সিং চৌহানের পরিবারের লোকজন ৷ সূত্রের খবর অনুযায়ী, সোনিকার মৃত্যু রহস্যের জট কাটাতে এমনকী, সিবিআইয়ের হস্তক্ষেপও চাইছেন সোনিকার পরিবার ৷ মদ্যপ অবস্থায় দুর্ঘটনার রাতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন বিক্রম ? তা জানতেই এখন তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ ৷
ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে দুর্ঘটনার দিন রাতের বিক্রম ও সোনিকার পার্টির ভিডিও ৷ সেই ভিডিওতে দেখা গিয়েছে পানীয়ের গ্লাস হাতে রয়েছেন বিক্রম ৷ সঙ্গে ছিলেন সোনিকাও ৷