খারাপ আবহাওয়ায় পাহাড়ে নিজেকে কীভাবে বাঁচিয়ে চলতে হয় সেটা সম্পর্কে আদৌ মানুষ বা ট্রেকাররা সচেতন কিনা সেটাই দেখা হচ্ছে। যারা একাধিক এক্সপিডিশন করেছেন তাঁরা বলছেন, পাহাড়ি পথে চলতে বিশেষ কিছু ব্যবস্থা অবলম্বন করা দরকার। প্রথমত, পরীক্ষার লাস্ট মিনিট সাজেশন এখানে হয় না। শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি প্রথম থেকেই নিতে হবে। আগে থেকে প্রস্তুত না হলে যে কোনও সময় বিপদ আসতে পারে। যেখানে ট্রেকিং করা হচ্ছে তার ভৌগোলিক অবস্থান সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হতে হবে৷ পুরোপুরি পড়াশোনা করে যেতে হবে৷ প্রয়োজনে বিকল্প রাস্তা জানা থাকতে হবে৷
advertisement
ট্রেকিং একটা টিম গেম। তাই সকলকেই দলের দক্ষতা-দুর্বলতা সম্পর্কে জানতে হবে৷ চার হাজার মিটারের ওপরে গেলেই যথাযথ ট্রেকিং সরঞ্জাম নিয়ে যেতে হবে। ট্রেকিং করার সময় আছে। সেই সময়েই যেতে হবে। হঠাৎ করে ইচ্ছা হল আর বেরিয়ে পড়লাম সেটা হবে না৷ এর পাশাপাশি ট্রেকিং রুটের দায়িত্বে থাকা স্থানীয় প্রশাসন ও পঞ্চায়েতকে নিজেদের গতিবিধি সম্পর্কে জানিয়ে রাখা উচিত। এমনকী রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদেরও। বাংলার পর্বতারোহী বসন্ত সিংহ রায় জানাচ্ছেন, "১৫ অক্টোবরের পরে গাড়ওয়াল হিমালয় ট্রেকে গিয়ে ওরা দেরি করে ফেলেছেন। ৫৩০০ মিটারের কাছাকাছি উচ্চতায় আবহাওয়া খারাপ হলেই বরফ পড়বে৷ একই সাথে তার আবেদন উপযুক্ত গাইড নিয়ে ট্রেকিং করুক। " অভিজ্ঞতা বলছে ২০১৪ সালে এরকমই এক খারাপ আবহাওয়ায় পড়েছিলেন বসন্ত সিংহ রায়৷ লাদাখের নুন শৃঙ্গ অভিযানে গিয়ে। কিন্তু ক্যাম্প ২ তে তারা সাতদিন অপেক্ষা করে নেমে আসেন নিরাপদে। ফলে ধৈর্য্য ও শারীরিক সক্ষমতা দুটোই প্রয়োজন ট্রেকিংয়ে৷
বিশিষ্ট পর্বাতোরোহী সত্যরুপ সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন, "পরিকাঠামো ঠিক করাটাও জরুরি। দুর্গম পথে যোগাযোগ রাখার জন্যে যে ডিভাইস দরকার তা এখানে ব্যবহার করতে হয় না৷ তাই বিপদ হলে খবর পৌছে দেওয়ার ব্যবস্থা থাকে না।" এর পাশাপাশি সত্যরুপ বলছেন, অনেকেরই হাই অল্টিটিউট ট্রেকে যাওয়ার অভিজ্ঞতা নেই৷ উপযুক্ত প্রশিক্ষণ অবধি নেই। আর সেটাই বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে৷ ইন্ডিয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ফাউন্ডেশন বা আই এম এফ অবশ্য বলছে, ৪০০০ মিটার উচ্চতার ওপরে গেলেই যথাযথ অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন সেই অনুমতি নেওয়া হয় না। সেটাই বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
আরও পড়ুন: বৃষ্টি, ধসের মধ্যেই বেড়ানোর আনন্দ, সিকিমের গুরডোংগমার হ্রদে বরফখেলা পর্যটকদের