টানেল এক্সপার্ট যারা রয়েছেন তারা বারবার পরীক্ষা করছেন। অন্যদিকে এসপ্ল্যানেড দিক থেকে আসা টানেল বোরিং মেশিনও বারবার পরীক্ষা করা হচ্ছে। যাতে কোনও ধরণের সমস্যা না তৈরি হয়। টানেল বোরিং মেশিন উর্বি শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশনে পৌছলেই তার কাজ শেষ নয়। উর্বি ফের মুখ ঘুরিয়ে রওনা দেবে বউবাজারের দিকে। তবে তার আগে তাকে বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। কারণ এই টানেল বোরিং মেশিন ঘোরাতে ও বসাতে সময় লাগবে।
advertisement
উর্বির সাথে সুড়ঙ্গ খুঁড়তে নামা অপর টানেল বোরিং মেশিন 'চান্ডি' বউবাজারে আটকে যায়। যার জন্য কলকাতায় মেট্রো রেলের ইতিহাসে ঘটে যায় বউবাজার বিপর্যয়। শিয়ালদহ মেট্রো স্টেশন থেকে উর্বি'র দুরত্ব এখন মাত্র ৪০ মিটারের কাছাকাছি। সে দিন পিছু গড়ে ১৫ মিটার করে এগোচ্ছে। যদিও এই গতি নিয়ে খুশি কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে করপোরেশন লিমিটেডের ইঞ্জিনিয়াররা।
গত বছর ৩১ আগষ্ট ঘটে যায় বউবাজার দূর্ঘটনা। তার জেরে দীর্ঘদিন আটকে থাকে এই অংশের কাজ। পরবর্তী সময় কাজ শুরু হলেও সেই কাজ ফের বাধাগ্রস্ত হয় করোনা আবহে। লকডাউনের সময় কাজ বন্ধ থাকে। সেই কাজ আনলক অধ্যায়ে শুরু করলেও তা টানেলে করোনা সংক্রমণের জেরে আটকে যায়। যদিও সেই বিপর্যয় সামলে কাজ ফের শুরু করে দেওয়া হয়। সেই টানেল বোরিং মেশিন ধীরে ধীরে শিয়ালদহ অবধি এগিয়ে এসেছে।
ইঞ্জিনিয়ারদের পরিকল্পনা অনুযায়ী শিয়ালদহ স্টেশনে আগামী শুক্রবার ৯ অক্টোবর টানেল বোরিং মেশিন উর্বি শিয়ালদহ স্টেশনে পৌছে যাবে। যদিও জোড়া সুড়ঙ্গ না হলে ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের এই গুরুত্বপূর্ণ অংশের কাজ সম্পূর্ণ হবে না। তাই উর্বি এসে পৌছনোর পরে, তার মুখ ঘুরিয়ে ফের পাঠানো হবে বউবাজারের দিকে। অন্যদিকে টানেল বোরিং মেশিন চান্ডি যেখানে আটকে আছে, সেখান থেকে তাকে তুলে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। বানানো হচ্ছে একটি বিশাল বড় চৌবাচ্চা। তার জন্যে লোহার দেওয়াল বানানো হচ্ছে। সেখান থেকেই খন্ড খন্ড টানেল বোরিং মেশিন চান্ডিকে তুলে ফেলা হবে। সেই কাজ শেষ হতে অবশ্য আগামী বছরের মাঝামাঝি হয়ে যাবে।
এই গোটা কাজের জন্যে শিয়ালদহ স্টেশনের পাশে থাকা বিদ্যাপতি সেতু নিয়ে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। গত সপ্তাহে এই কাজের জন্যে শিয়ালদহ বিদ্যাপতি সেতুর ওপর গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছিল। কে এম আর সি এল সূত্রে জানানো হয়েছে, ব্রেবোর্ন রোডে কাজের সময় এ ভাবেই সেতু বন্ধ রাখা হয়েছিল। তবে মাটির নীচে সমস্ত ধরনের সতর্কতা নিয়ে রাখা হয়েছে। যাতে তীরে এসে তরী না ডোবে। আবার যখন টানেল বোরিং মেশিন বউবাজারের দিকে রওনা দেবে তখন আবার সেতু নিয়ন্ত্রণ করা হবে। রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল অবশ্য জানিয়েছেন, ২০২১ ডিসেম্বর থেকে চালু হয়ে যাবে এই প্রকল্প। যার ফলে হাওড়া ময়দান থেকে সেক্টর ফাইভ অবধি যাতায়াত করা সম্ভব হবে।