নামী দোকান হোক কিংবা গড়িয়াহাট বা হাতিবাগানের হকিং জোন। থরে থরে সাজানো পোশাক। আগের পরিস্থিতি হলে ইচ্ছে মতো তুলে নেওয়া যেত পছন্দেরটা। তারপর শরীরে পড়ে, চোখের মাপে যুতসই পোশাকটা তুলে নিলেই কাজ শেষ। ঝা চকচকে ব্র্যান্ডের দোকান হলে পছন্দের ২/৪টে হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে সেধিয়ে যাওয়া যেত ট্রায়াল রুমে। কিন্তু কোভিড পরবর্তী সময়ে সেখানেও ওত পেতে বিপদ। ট্রায়াল রুমের আনাচে-কানাচে কিংবা পছন্দের পোশাকের ভাঁজে অপেক্ষা করছে না তো করোনা ভাইরাস? কে জানে, আপনার আগে পছন্দের সেই পোশাক যিনি ট্রায়ালে নিয়েছেন, তিনি কোভিড ক্যারিয়র কী না? কোভিড পরবর্তী পর্যায়ে মানুষের সুরক্ষা বিষয়ে কোনও রকম আপোষ করতে রাজি নন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
advertisement
কলকাতার একটি নামী ব্র্যান্ডের কর্ণধার সিতাংশু ঝুনঝুনওয়ালা বলছিলেন,"বিক্রয় পদ্ধতির ক্ষেত্রে গুরুত্ব পাবে স্বাস্থ্য বিধি ও কোভিড সতর্কতা। কোনওভাবেই মানুষের সুরক্ষার সঙ্গে ন্যূনতম আপোষ করা হবে না।"
শহরের অনেক নামী জামা কাপড়ের দোকানে ট্রায়াল পদ্ধতি ইতিমধ্যেই বাতিল করা হয়েছে। চোখের মাপে বুঝে নিয়ে জামাকাপড় কেনার ওপর জোর দিয়েছেন দোকান মালিকরা। দোকানে প্রবেশ করার ক্ষেত্রে থার্মাল স্কিনিং হ্যান্ড সানিটাইজিং বাধ্যতামূলক। ট্রায়াল দেওয়া পোশাক বিশেষ পদ্ধতিতে স্টিম আয়রন করে তবেই আবার ফেরত যাচ্ছে শপিং র্যাকে।
চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ আধিকারিক কাজল কৃষ্ণ বণিক জানাচ্ছেন,"৬২ থেকে ৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় টিকতে পারে না করোনা ভাইরাস। কিন্তু তারপরেও ট্রায়াল রুমে মারুন ভাইরাসের ওত পেতে থাকার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।"
বারে-বারে আয়রন করা হলে পোশাক কী আর নতুন থাকে? গুণগত মানে পরিবর্তন হয় না কী? বিক্রেতাদের বক্তব্য, স্টিম আয়রন এমনভাবে করা হচ্ছে যাতে পোশাকের গুণগত মানে কোনো প্রভাব না পড়ে।
এতকিছুর পরেও মনের খচখচানি টা রয়ে যায়। কোভিড-19 পরিস্থিতি নতুন সংকটের মধ্যে এনে দাঁড় করিয়েছে গোটা সমাজকে, যে পরিস্থিতি মানুষ আগে কখনও দেখেনি। ভয়টা সেখানেই।
PARADIP GHOSH