#কলকাতা: পারমিতাকে ভালবেসেছিলেন অনুপম। কিন্তু, পারমিতা কি ভালবেসেছিল অনুপমকে? উত্তর জানা নেই। তবে সেই পরিণতি না-পাওয়া প্রেমের গল্পটা আজও লিখে চলেছেন অনুপম। কালে কালে তা হয়ে উঠেছে ৩২৭ ফুট দৈর্ঘ্যের এক অনন্য প্রেমপত্র। বিশ্বের দীর্ঘতম প্রেমপত্রের স্বীকৃতি চেয়ে ‘গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস’ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন "ব্যর্থ" প্রেমিক। শুধুমাত্র কলকাতা বা রাজ্যের অন্য কোথাও নয় , গোটা বিশ্বে এই ধরনের নজির রয়েছে কিনা তা বলা মুশকিল।
advertisement
বাঙালির কাছে ব্যর্থ প্রেমিকের চিরকালীন আইকন দেবদাস। পার্বতীকে না পেয়ে নিজেকে তিলে তিলে শেষ করে দিয়েছিলেন তিনি। প্রেমে ব্যর্থ হয়ে সেই পথে হাঁটতে চেয়েছিলেন আসানসোলের অনুপম ঘোষালও। কিন্তু, আত্মহত্যা করলে যে ভালবাসার গল্পটা না-বলা থেকে যাবে! অতএব প্রেয়সী পারমিতাকে উদ্দেশ্য করে চিঠি লিখতে শুরু করলেন অনুপম। সেটা ২০০০ সাল, ১২ জানুয়ারি। কার্যত নাওয়া-খাওয়া ভুলে শুধু লিখেই গিয়েছেন তিনি। আজও সেই কলম চলছে। কলমের আঁচড়ে সাদা পাতায় পারমিতাকে কাছে না পাওয়ার যন্ত্রনা, কবিতায়, কথায় সৃষ্টি হয়েছে ৩২৭ ফুট দৈর্ঘ্যের এক অনন্য প্রেমপত্র।
আর সেই বার্তা পৌঁছে গিয়েছে সুদূর সুইৎজারল্যান্ডে ‘গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস’-এর দফতরে। বিশ্বের দীর্ঘতম প্রেমপত্রের স্বীকৃতি চেয়ে আবেদন করেছেন অনুপম। প্রাপ্তি স্বীকারের চিঠিও এসেছে। বর্তমানে কলকাতার লেকটাউনের বাসিন্দা অনুপম বলেন, ‘প্রেমের ‘না পরিণতিতে’ আত্মহত্যার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু পারমিতার জন্য জমে ছিল অনেক কথা। সেসবের কী হবে? তাই নিমন্ত্রণ বাড়ির খাবার টেবিলে পাতা আড়াই কেজির সস্তা রোল পেপারের ওপর শুরু করেছিলাম পারমিতার জন্য আমার কথামালা।’
তবে শুধু ভালবাসার কথাই নয়, চিঠিতে পারমিতাকে উদ্দেশ্য করে আটটি গানও লিখেছেন অনুপম। অনেকেই তাঁকে ‘মিস্টার ভ্যালেন্টাইন’ বলে ডাকেন। সমস্যা বলতে একটাই, সস্তার কাগজে লেখা চিঠি যে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাই সংরক্ষণের জন্য আর্জি জানিয়েছেন অনুপম বিভিন্ন মহলে। তবে এখনও পর্যন্ত আসেনি কোন সদুত্তর। তাঁর চিঠি একদিন ঠিকই পৌঁছে যাবে পারমিতার কাছে। সেই আশাতেই দিন কাটছে অনুপমের। হয়তো নতুন বছর অনেক নতুন আশা নিয়ে হাজির হবে তাঁর জীবনে। কিন্তু পারমিতা ? প্রশ্ন আছে । উত্তর এখনো অজানা অনুপমের।