দুই বিধানসভা আসনে জয় নিশ্চিত করেছে বিজেপি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বক্তব্য, বাংলার এই একটি লোকসভা আসনের উপনির্বাচন ঘিরে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে আগ্রহ। কারণ হিসাবে উঠে আসছে, ২০১৪ ও ২০১৯ দুই লোকসভা ভোটেই বাংলার এটিই ছিল একমাত্র আসন, যেখানে প্রচারে এসে মোদি বলেছিলেন, ‘‘মুঝে বাবুল চাহিয়ে’’। সেই বাবুল দ্বিতীয়বার ভোটে জেতার দু’বছরের মধ্যেই বিজেপি সঙ্গ ত্যাগ করে। বিজেপির মধ্যের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলে দেয়। যোগদান করে তৃণমূলে।
advertisement
দ্বিতীয়ত, উত্তর প্রদেশ-সহ ৫ রাজ্যের ভোটের ফল প্রকাশের পরে নির্বাচন হতে চলেছে। বিজেপি শিবির অক্সিজেন পেয়েছে উত্তর প্রদেশ বা গোয়ার মত রাজ্য থেকে। তাই লোকসভা ভোটে নিজেদের আসন পুনরুদ্ধারে সচেষ্ট হচ্ছে তারা। তৃতীয়ত, বিজেপি কাউকে প্রার্থী হিসাবে এখনও ঘোষণা না করলেও, তৃণমূলের প্রার্থী 'বহিরাগত' এই ইস্যুতে কটাক্ষ করতে নেমে পড়েছে। যদিও হিন্দিভাষী এলাকার এই ভোটে পটনা সাহিবের প্রাক্তন সাংসদ কী ম্যাজিক দেখান সেটাই এখন দেখার।
আরও পড়ুন-টিকটিকির উৎপাত? বাড়ি থেকে দূর হবে সহজেই, কাজে লাগান এই উপায়গুলো
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, আসানসোলে ২০১৯ লোকসভা ও ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের ফলের ফারাক। ২০১৯-এর লোকসভায় বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয় ভোট পেয়েছিলেন ৬ লক্ষ ৩৩ হাজার ৫৭৮টি। তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেন পেয়েছিলেন ৪ লক্ষ ৩৫ হাজার ৭৪১ ভোট। শতাংশের হিসাবে দেখা গিয়েছিল, বিজেপির ভোট শতাংশ ৫১.১৬%, তৃণমূলের ভোট ৩৫.১৯%, বামেদের ভোট ছিল ৭.০৮%, কংগ্রেস, নোটা-সহ বাকিদের মিলিত ভোট শতাংশ ছিল ৭% এর কাছাকাছি। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের প্রাপ্ত ফলে দেখা যায়, আসানসোল লোকসভার মধ্যে থাকা বিধানসভা ভোটের ফল বিশ্লেষণে উঠে আসে, বারাবনি বিধানসভা আসন।
তৃণমূল প্রার্থী বিধান উপাধ্যায় পেয়েছিলেন ৫২% ভোট। বিজেপি প্রার্থী অরিজিৎ রায় পেয়েছিলেন ৩৮% ভোট। তৃণমূলের জয়ের ব্যবধান ছিল ২৩৪৫৭'টি ভোট। জামুরিয়া বিধানসভা আসন। তৃণমূলের প্রার্থী বর্ধমান হরেরাম সিং পেয়েছিলেন ৪৩% ভোট। বিজেপি প্রার্থী তাপস রায় পেয়েছেন ৩৮% ভোট। তৃণমূলের জয়ের ব্যবধান ছিল ৮০৫১ ভোট। পান্ডবেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্র। তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী পেয়েছিলেন ৪৫% ভোট। বিজেপি প্রার্থী জিতেন্দ্র তিওয়ারি পেয়েছিলেন ৪৩% ভোট। তৃণমূল প্রার্থীর জয়ের ব্যবধান ছিল ৩৮০৩ ভোট।
আরও পড়ুন-পুরুষদের এই ধরনের স্বভাব আকৃষ্ট করে মহিলাদের, বলছে সমীক্ষা
আসানসোল উত্তর বিধানসভা আসন। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী মলয় ঘটকের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৫২ শতাংশ । বিজেপি প্রার্থী কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়ের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৪১ শতাংশ। তৃণমূলের জয়ের ব্যবধান ছিল ২১১১০ ভোট। রানিগঞ্জ বিধানসভা আসন। তৃণমূল প্রার্থী তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় প্রাপ্ত ভোট ছিল ৪৩ শতাংশ। বিজেপি প্রার্থী বিজন মুখোপাধ্যায়ের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৪১ শতাংশ। তৃণমূল কংগ্রেসের জয়ের ব্যবধান ছিল ৩৫৫৬ ভোট। বাকি দুই বিধানসভা আসন জিতে নেয় বিজেপি শিবির। আসানসোল দক্ষিণে বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পালের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৪৫%।
তৃণমূল প্রার্থী সায়নী ঘোষের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৪৩%। বিজেপির জয়ের ব্যবধান ছিল ৪৪৮৭ ভোট। কুলটি বিধানসভা আসন। বিজেপির প্রার্থী অজয় পোদ্দারের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৪৬%। তৃণমূলের প্রার্থী উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়ের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৪৬%। বিজেপি প্রার্থীর জয়ের ব্যবধান ৬৭৯ ভোট। এই সব বিধানসভা আসনেই জয়ের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে তৃণমূল। প্রয়োজনে প্রতিটি বিধানসভার জন্যে আলাদা আলাদা করে দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হবে। মূল লক্ষ্য সাংগঠনিক শক্তির জোরেই জয়।
আবীর ঘোষাল
