রফি আহমেদ কিদওয়াই রোডের এই শতাব্দীপ্রাচীন বাড়িটাই ছিল অনেকের শেষ ঠাঁই। শরীর তখন দেহ হয়েছে। মৃতদেহ। কিন্তু, প্রিয়জনেরা থাকেন অনেক দূরে। তাদের আসা পর্যন্ত তাই নিথর দেহের শুয়ে থাকা। শেষযাত্রার অগে শেষ কিছুক্ষণের অপেক্ষা। এই বাড়িটাই ছিল শেষযাত্রার আগের ঠিকানা। পিস হাভেন। সেটাও এবার বিলুপ্তির পথে। নীরবে কলকাতার বুক থেকে মুছে যাচ্ছে আরেক ঐতিহ্য। আইনি জটিলতা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে প্রায় এক মাস ধরে এই পিস হাভেন বন্ধ। ব্রিটিশ আমলের যে বাড়িটায় আগে এগারোটি দেহ শুয়ে থাকত, সেই বাড়িটার এখন ভগ্নদশা। রবিবার এর একাংশ ভেঙেও পড়ে।
advertisement
একসময় এই পিস হাভেনে কফিনও তৈরি হত। সেই কফিনেই ব্রিটিশদের দেহ তাঁদের দেশে পাঠানো হত। এই বাড়িটা কলকাতাকে অনেক দিন ধরে দেখেছে। দেখেছে, বহু সমাপ্তি। এখানে রাখা ছিল বহু বিশিষ্টজন এবং রাজনীতিকদের দেহ। এরকম ঐতিহ্যবাহী পিস হাভেনই হারিয়ে যাচ্ছে। একই হাল বো ব্যারাকের এই শবাগারটিরও। এর বয়স প্রায় ২০০ বছর। এটিরও দিন ফুরিয়েছে।
আধুনিক কলকাতায় এখন রাজ্য সরকারের তৈরি করা তপসিয়ার এই পিস ওয়ার্ল্ডই ভরসা। ২০১৫ সালে এটি তৈরি করা হয়। ২৪ জনের দেহ রাখা যায়। এখানে উন্নত পরিকাঠামো রয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তি আছে। কিন্তু, ঐতিহ্য? সে তো হারিয়ে গেল। সবার অজান্তে। নীরবে।