তাঁদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী মোদি তার নিজের জমিদারি আদবকায়দা বজায় রেখেছেন। শিলিগুড়িতে তিনি রাজনৈতিক তার বক্তব্য দিতে আসার আগে অসমে হাতির পিঠে চড়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন অথচ সাধারণ মানুষের কলকাতা বা ব্রিগেডে যাবার যে ট্রেন আগাম বুকিং করেছিল তা জমিদারি ফলিয়ে বাতিল করেছেন। এর থেকেই বোঝা যায় যে, বিজেপি উত্তরবঙ্গের সাধারণ মানুষ কেন্দ্রীয় সরকারের যে বঞ্চনা তার দাবি কলকাতায় এসে তুলে ধরবেন সেই রাস্তা রাখতে চাইছে না। অর্থাৎ জমিদার সাহেব নিজের একনায়কতন্ত্র ফলিয়ে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ার জেলার লোকেদের আটকে দিতে চাইছেন।
advertisement
আরও পড়ুন : রবিবার জনগর্জন! সফল করতে মরিয়া তৃণমূল, জেলায় জেলায় প্রস্তুতি… স্লোগান কী থাকছে?
তাঁদের কথায়, এটাই কি মোদির গ্যারান্টি যেখানে সাধারণ মানুষ নিজের ইচ্ছে কোনও জায়গায় যেতে পারবে না! নিজের ইচ্ছে মতো খাবার খেতে পারবে না! নিজের ইচ্ছেমতো পোশাক পরতে পারবে না! যদি এটাই ভাবনাচিন্তা হয়, সমগ্র বাংলা এই দাবি নস্যাৎ জানিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ তাঁর বক্তব্যে বলেন, “প্রধানমন্ত্রী আজ শিলিগুড়িতে আসছেন উত্তরবঙ্গের মানুষের কাছে তাঁর অমৃতবাণী প্রচার করতে। এখানে আসার আগে তিনি আগেকারদিনের জমিদারদের মতো অসমে হাতি পিঠে চড়ে ঘুরে বেড়ালেন। এটাই স্বাভাবিক, যেভাবে তিনি পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ মানুষের ১০০ দিনের টাকা বন্ধ করে দিয়েছেন, যে ভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে দিয়েছেন তাতে বোঝা যাচ্ছে যে তিনি বাংলার জনগণের ওপর হাতির বোঝা চাপিয়ে দিয়েছেন। অথচ উত্তরবঙ্গবাসীরা ব্রিগেডে যাবে বলে আগাম অর্থ দিয়ে ট্রেন বুক করা হয়েছিল তা বাতিল করে দিয়েছে। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে তিনি কিরকম জমিদার প্রথা চালাবার চেষ্টা করছেন আমি মনে করি আগামী দিনে এর জবাব উত্তরবঙ্গের মানুষ আগামী লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে বুঝিয়ে দেবে।”
সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় তাঁর বক্তব্যে বলেন, “আজ শিলিগুড়ির জনসভায় বক্তব্য রাখার আগে আমরা দেখলাম প্রধানমন্ত্রী মোদি নিজের বিনোদনের জন্য অসমে হাতির পিঠে চড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ইতিমধ্যে আপনি বাংলায় তিনটি জনসভাতে উপস্থিত থেকে রাজনৈতিক বক্তব্য রেখেছেন কিন্তু বাংলার যে ন্যায্য দাবি ১০০ দিনের টাকা থেকে শুরু করে, আবাস যোজনার টাকা সমস্ত কিছু আটকে রেখে দিয়েছেন তা নিয়ে একটা বক্তব্য রাখেননি। পাশাপাশি চা বাগানগুলোর যে হতশ্রী অবস্থা যেগুলোকে আপনাদের অধিগ্রহণ করার কথা ছিল আপনারা করেননি, রাজবংশী কামতাপুরি ভাষা আপনাদের স্বীকৃতি দেওয়ার কথা ছিল সেটাও হয়নি, নারায়ণী সেনা দেওয়ার কথা সেটাও করেননি। শুধুমাত্র উত্তরবঙ্গের মানুষের সঙ্গে বিজেপি শাসিত কেন্দ্রীয় সরকার বঞ্চনা করেছেন। জমিদারি প্রথা ফলিয়ে ব্রিগেডে যাবার ট্রেনগুলি বাতিল করছেন এর জবাব আপনাকে উত্তরবঙ্গের মানুষ আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে মানুষ দেবে। “
জনগর্জন সভায় মালদহ, দিনাজপুর থেকে যোগ দিতে আসা তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী- সমর্থকদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। খাওয়া-দাওয়ার পাশাপাশি চিকিৎসার জন্য মেডিক্যাল টিমও প্রস্তুত রয়েছে। এখনও কর্মী সমর্থকেরা সেভাবে আসতে শুরু করেননি। নেতাজি ইন্ডোরে ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা বলছেন, বিকালের পর থেকে আসতে শুরু করবেন মানুষ। নেতাজি ইন্ডোরের ব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখার জন্য আসতে পারেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।