এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, জঙ্গলমহলের জন্য কাদের উপরে ভরসা রেখেছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
ঝাড়গ্রাম থেকে তৃণমূল প্রার্থী হচ্ছেন পদ্মশ্রী, তথা বঙ্গবিভূষণ কালীপদ সোরেন৷ সাঁওতালি সাহিত্যিক ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা কালীপদ সাহিত্য জগতে ‘খেরওয়াল সরেন’ ছদ্মনামেই বেশি পরিচিত৷ দু’বার সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন। বছর চৌষট্টির খেরওয়ালের বাড়ি ঝাড়গ্রাম শহরের ভরতপুরে। পেশায় অবসরপ্রাপ্ত ব্যাঙ্ককর্মী৷
advertisement
মেদিনীপুর থেকে তৃণমূলপ্রার্থী হচ্ছেন জুন মালিয়া৷ একুশের নির্বাচনেই মেদিনীপুর বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করেছিলেন তিনি৷
পুরুলিয়ায় তৃণমূলপ্রার্থী হচ্ছেন শান্তিরাম মাহাতো৷ বাঁকুড়ায় তৃণমূলের সাংসদ প্রার্থী হচ্ছেন, লড্যাংরার বিধায়ক, অরূপ চক্রবর্তী৷
তমলুকের তৃণমূলের রয়েছে নতুন চমক৷ যুব তৃণমূলের সদস্য তথা সুবক্তা দেবাংশ ভট্টাচার্যকে
তমলুক থেকে প্রার্থী করছে তৃণমূল৷
অধিকারী গড় শিশির-শুভেন্দুর কাঁথি থেকে প্রার্থী করা হচ্ছে উত্তম বারিককে৷ বোলপুর থেকে তৃণমূল প্রার্থী হচ্ছেন অসিত মাল৷ বীরভূমের আসনে অভিনেত্রী শতাব্দী রায়তেই ভরসা রেখেছে তৃণমূল৷ তবে চমক রয়েছে বিষ্ণুপুর আসনে৷ এই আসনে প্রার্থী করা হচ্ছে সুজাতা খাঁ-কে৷
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সাল থেকে বিষ্ণুপুর কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সুজাতা খাঁয়ের প্রাক্তন স্বামী সৌমিত্র খাঁ৷ ২০১৯ সালে বিজেপি-তে যোগদান করেন সৌমিত্র৷
২০১৯-সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সৌমিত্র খাঁয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তিনি চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে টাকা নিয়েছিলেন৷ এরপরে তাঁর বাঁকুড়ায় প্রবেশের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে কলকাতা হাইকোর্ট । পরের মাসে, সৌমিত্রকে বাঁকুড়া পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে। সে বছরই ১২ এপ্রিল, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট তাঁর উপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে অস্বীকার করে যদিও তাঁকে তার মনোনয়নপত্র দাখিলের জন্য জেলায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: ইস্তেহারের আগেই ‘ইস্তেহার’! জনগর্জন সভায় কেন্দ্রের বঞ্চনাকেই ‘অস্ত্র’ করতে চলেছে তৃণমূল
সেই সময় সৌমিত্র খানের অনুপস্থিতিতে তাঁর তৎকালীন স্ত্রী সুজাতা খান লোকসভা নির্বাচনে তাঁর হয়ে প্রচার করেছিলেন। ওই আসন থেকে ৭৮,০৪৭ ভোটের ব্যবধানে উনিশের লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন সৌমিত্র৷ কোনও রোড শো বা কোনও রাজনৈতিক সমাবেশ না করেই।
উনিশের নির্বাচনে উত্তরবঙ্গ এবং জঙ্গলমহল অন্যতম ঘাঁটি হয়ে উঠেছিল বিজেপির৷ তবে একুশের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হতে অবশ্য দেখা যায় সেই জোর অনেকটাই শিথিল৷ গত পাঁচ বছর ধরে বিজেপির শক্ত ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত জঙ্গলমহল ও পাহাড়ে ধীরে ধীরে ফের হারানো মাটি পুনরুদ্ধারের জোরাল চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল তৃণমূল৷ এখন লোকসভা নির্বাচনে সেই চেষ্টার ফসল কতখানি তারা পায়, সেটাই দেখার৷