দীর্ঘদিন ধরে আমাদের কাছে খবর ছিল কলকাতার ময়ূরভঞ্জ রোডে, ভিডিও গলিতে একটি গম ভাঙানো মেশিনে আটা ভাঙানো হচ্ছে। কথাটা শুনতে একটু তাজ্জব লাগছে! আটা ভাঙানো ব্যাপারটা কী রকম?
ওই গম ভাঙানো মেশিনটি রাজেন্দ্র সাউ এবং তার দুই ছেলে মিলে চালায়। সূত্র মারফত খবর আসে, ওরা আগে শুধু গম ভাঙাতো। ব্যবসায় লাভ কম হত। ইদানিংকালে রেশনের আটা চোরাই পথে কিনে, সেই আটা মেশিনে আরও গুড়ো করে বিক্রি করছে ওরা।এতে ক্রয় মূল্যের থেকে বিক্রয় মূল্যের মধ্যে বেশ ব্যবধান থাকে।ফলে বেশি লাভের মুখ দেখছে রাজেন্দ্র সাউ।
advertisement
এই ধরনের ব্যবসা ফেঁদেছে তিন চার বছর। যার ফলে ওই বিল্ডিংয়ের পেছনে ও ডোম পট্টিতে দুটি বড় বড় গুদাম বানিয়েছে।স্থানীয় থানা শোনার পর বিষয়টিকে কোনও ভাবে গুরুত্ব দিতে চাননি। পশ্চিমবঙ্গ খাদ্য দফতরের কর্মীদের কথায় এলাকায় গিয়ে গোডাউন তল্লাশি করা সম্ভব নয়।কারণ ওখানে যতবার গিয়েছে, ততবার হেনস্থা হতে হয়েছে খাদ্য দফতরের কর্মীদের। ওই এলাকায় খোঁজ নিতে গিয়ে দেখা যায়, হোলারে আটা ঢেলে ভাঙাচ্ছে। রেশনের আটা। কারণ, এই আটা খুব কম দামে পাওয়া যায়। প্রচুর মানুষ আছেন যাঁরা,আটা কেনেন না রেশন থেকে।কারণ এই আটা খুব মোটা হয়।
চালুনিতে চাললে ওই আটার অনেকটা পরিমাণ ভুসি বের হয়। তাই অনেকে খায় না।সেই সুযোগে রাজেন্দ্র এগুলো অসাধু ডিলারদের কাছ থেকে কিনে নিয়ে মিহি করে বেশি দামে বিক্রি করে। ওর দোকানের সামনের আটা ভর্তি বস্তাটি ওল্টানো ছিল।পরিষ্কার পিএইচএইচ লেখা বোঝা যাচ্ছিল। তবে স্থানীয় বেশ কিছু মস্তানদের হাতে রেখে এই কাজ দিনের পর দিন করে যাচ্ছে রাজেন্দ্র।
সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে ওর লোকজনেরা রীতিমত হেনস্থা করে সাংবাদিককে।কোনও ভাবে ওখান থেকে চলে যাওয়ার পরে দোকান বন্ধ করে পালায় রাজেন্দ্র। লকডাউনের সময় রেশনের চাল, আটাতে মানুষের দিন গুজরান হচ্ছে না।সেখানে এই ভাবে চুরি করা, ঘৃণ্য অপরাধ বলে মনে করছেন সবাই। শুধু রাজেন্দ্র সাউ নয়, রেশন ডিলারদের দৌলতে প্রচুর মানুষ আছে, যারা এই ভাবে অসৎ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
অনেকে আবার রেশন ব্যবস্থায় গলদের প্রসঙ্গ তুলেছেন। স্থানীয়রা অনেকেই রাজেন্দ্র ও তার ছেলেদের এই অবৈধ ব্যবসার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারছে না গুন্ডাদের ভয়ে।