গত কয়েকমাস কাবুলে শিক্ষকতা করতেন নিমতার(Nimta) তমাল ভট্টাচার্য। রবিবার রাতে তিনি নিমতার বাড়িতে পৌঁছন। আর তাঁর মুখেই শোনা গেল তালিবানি-রাজের অন্য গল্প। তরুণ শিক্ষকের কথায় বার বার এদিন উঠে আসে তালিবানের 'সদর্থক' রূপের কথা। তাঁদের আন্তরিতাকতা, সৌজন্য , ভালোবাসা, সহযোগিতার কথা। এমনকি নারীদের প্রতি তালিবানরা ঠিক কী মনোভাবাপন্ন, সেটাও স্পষ্ট করেছেন বাঙালি শিক্ষক।
advertisement
তমালের কথায়, “আপনারা আফগানিস্তান না গেলে বুঝবেনই না যে ওখানে কী হয়…তালিবান সম্পর্কে আপনারা যা দেখেছেন…তা সম্পূর্ণ সত্যি নয়… তালিবান নেভার কিলড এনি ওয়ান..”। বস্তুত এদিন তমালের কথায় স্পষ্ট বোঝা যায় তালিবানদের প্রতি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ তিনি। তমাল জানিয়েছেন, যাঁদের কাছে পাসপোর্ট ছিল না, তাঁদেরকেও পর্যন্ত নিজেদের দেশে ফিরতে দিয়েছেন তালিবানরা। প্রত্যেককে যেতে দিয়েছে, যাতে কারোর কোনও অসুবিধা না হয়, সেদিকে তাঁরা বিশেষ নজর রেখেছিলেন বলেও জানান তমাল।
তালিবানদের 'নারী বিদ্বেষী' তকমা নিয়েও নিজের মত জানিয়েছেন তমাল। তাঁর কথায়, “দ্যাটস অ্যানাদার লাই.. আমিও যেটা ভাবতাম, তালিবান মানে হচ্ছে প্রচণ্ড রকমের নারী বিদ্বেষী। নারী স্বাধীনতা তাঁরা মানতে পারেন না। ৯/১১ হওয়ার পর থেকে আমি বিভিন্ন বই পড়েছি। তালিবানরা ইসলামি শরিয়তি আইন মেনে চলেন। সেখানে কখনই বলা নেই, মেয়েরা স্কুলে যেতে পারবে না। তালিবানরা সেটাই মেনে চলে। আফগানিস্তানে প্রচুর শিক্ষিত মহিলা রয়েছেন। তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করেন। তাঁদের কর্মস্থলে যেতে বাধা দিচ্ছেন তালিবানরা। হিজাব পরার কথাটা বলেছেন।”
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কাবুলের সরকারি চ্যানেল যে প্রচুর মহিলা সাংবাদিকের চাকরি চলে যায় তাহলে কি সে খবর মিথ্যা? গুলি করে খুন করার খবরও কি মিথ্যা? তমালের সাফ জবাব, “আমি কাবুলে ছিলাম। কাবুলে তো এমন কিচ্ছু হয়নি। যাঁরা মারা গিয়েছেন, সেটা অন্য কারণে। আমি যে স্কুলে পড়াতাম, সে স্কুলেও প্রচুর মহিলা শিক্ষকতা করেন। তাঁরা প্রত্যেকেই কাজ করছেন এখনও। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় স্তরেও প্রচুর মহিলা অধ্যাপনা করছেন এখনও।”
তবে একইসঙ্গে তালিবানরা যে প্রতিহিংসাপরায়ণ সেকথা মনে করিয়ে দিলেন পেশায় শিক্ষক, তমাল। তবে তালিবান সম্পর্কে মানুষের মনে যে অনেক ভ্রান্ত ধারণা আছে, এমনকি তাঁর নিজেরও ছিল সেকথা বার বার স্মরণ করান তমাল ভট্টাচার্য। আগামী দিনে ফিরে যেতে চান কিনা জিজ্ঞেস করা হলে, তমালের জবাব "আই ওয়ান্ট টু ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ।"