সুরাতের নিম্ন আদালত রাহুল গান্ধিকে দু' বছর কারাদণ্ড দেওয়ায় সংসদের আইন অনুসারে রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছেন লোকসভার অধ্যক্ষ। রাহুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করতে গিয়ে গোটা মোদী সম্প্রদায়কে অসম্মান করেছেন। এই মামলায় সুরাতের নিম্ন আদালত, রাহুল গান্ধীকে ২ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। এই রায়ের জেরেই সাংসদ পদ খোয়াতে হয়েছে রাহুলকে।
advertisement
আরও পড়ুন: সুজনের স্ত্রীর বিরুদ্ধে তদন্ত করলে রাগ করতে পারেন মমতা! কারণ জানালেন ব্রাত্য
রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ কেড়ে নেওয়া হতে পারে বলে আগেই আশঙ্কা করেছিল কংগ্রেস। শেষ পর্যন্ত, সেই আশঙ্কা সত্যি হওয়ার পরেই কেন্দ্রের মোদি সরকারের সমালোচনায় সরব হয় কংগ্রেস সহ দেশের অধিকাংশ বিরোধী রাজনৈতিক দল।
লোকসভা ভোটে মোদি বিরোধী মঞ্চ গড়া নিয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে টানাপোড়েন চলছিল তৃণমূলের। এরই মধ্যে রাজ্যে সাগরদিঘি উপনির্বাচনে কংগ্রেসের কাছে হারার পর, সেই দূরত্ব আরও চওড়া হয়। রাজ্যের মাটিতে তৃণমূলকে হারাতে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিজেপির সঙ্গে আঁতাতের অভিযোগ তুলেছিলেন মমতা। এর পরেই, জাতীয় স্তরে মোদি বিরোধী জোটের লক্ষ্যে সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব, ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়কের সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা। শুক্রবার বৈঠক করেন কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামীর সঙ্গেও৷
আরও পড়ুন: বাড়বে বিপত্তি! সাজা বহাল থাকলে পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনে রাহুলের বয়স হবে ৬৩
রাহুলকে নিশানা করে মমতা দিন কয়েক আগেই দলীয় বৈঠকে বলেন, রাহুল গান্ধিকে তাঁর বিরুদ্ধে মুখ করতে চাইছেন মোদি। কারণ, তাতে মোদির লাভ। লোকসভা ভোটের আগে সারা দেশে মোদু ও বিজেপির বিরুদ্ধে অ-কংগ্রেসি, অ-বিজেপি জোট গড়ার সলতে পাকানোয় যখন ব্যস্ত মমতা, তখনই রাহুল গান্ধির সাংসদ পদ কেড়ে নিল কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। আর, সেই ঘটনার জেরে রাহুলের পাশে দাঁড়ালেন মমতা।
রাহুলের পাশে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রের মোদি সরকারের সমালোচনা করে মমতা তার ট্যুইটে বলেন, 'এটাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নতুন ভারত। যেখানে দেশজুড়ে বিরোধী নেতা নেত্রীরাই বিজেপির আক্রমণের লক্ষ্য। মন্ত্রিসভায় যখন ফৌজদারি অভিযোগে অভিযুক্ত বিজেপি নেতারা দিব্যি বহাল তবিয়তে, তখন মোদির বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য সাংসদ পদ খোয়াতে হয় বিরোধীদের।' মমতার পর রাহুল গান্ধির পাশে দাঁড়াতে অভিষেক বন্দোপাধ্যায় থেকে ডেরেক ও'ব্রায়েন -এর মতো তৃণমূল সাংসদরাও সরব হয়েছেন। রাজনৈতিক মহলের কাছে যা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
আর, প্রত্যাশিত ভাবে, রাহুলের পাশে দাঁড়ানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করল বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রীর রাহুলের জন্য দরদ দেখাতে তাঁর পাশে দাঁড়ান নি। আসলে, উনি আতঙ্কিত। এই ঘটনায় অশনি সংকেত দেখছেন উনি। কারণ, আদালতের এই রায়ের পরে এটা স্পষ্ট যে দেশে আইনের শাসন এখনও সবার জন্য সমান। ফলে, রাহুলের মতো ওনারও বিধায়ক পদ খারিজ হতে পারে।'