‘‘নির্বাচন কমিশন পশ্চিমবঙ্গে সপ্তম দফার ভোট প্রচারের সময়সূচি আকস্মিকভাবে হ্রাস করে ১৬মে রাতেই তা শেষ করার নির্দেশ জারি করেছে। এমনভাবে এই সময়সূচি হ্রাস করা হয়েছে যাতে রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর ‘রোড শো’ বা জনসভা, হেলিকপ্টারে সফরের নির্ধারিত কর্মসূচি বিঘ্নিত না হয়।
বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেসকে সুবিধা করে দিতেই এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে। অন্য রাজনৈতিক দলগুলির অনেক কর্মসূচি ব্যাহত হবে। কমিশনের নির্দেশিকায় এই সিদ্ধান্তের যুক্তি হিসাবে যে-সমস্ত কারণ দেখানো হয়েছে, তা আপাতদৃষ্টিতে ঠিক মনে হলেও কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। রাজ্যে হিংসাত্মক পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে, কমিশনের নির্দেশ রাজ্য প্রশাসন উপেক্ষা করছে বলে বলা হয়েছে। কিন্তু একথা বলাই যথেষ্ট নয়। নির্বাচন কমিশনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ রক্ষিত হয়নি, উপেক্ষিত হয়েছে। কিন্তু কমিশন প্রথম থেকেই নিষ্ক্রিয় থেকেছে, নিজেদেরই নির্দেশ কার্যকর করার বিষয়ে কোনও উদ্যোগ নেয়নি। কমিশনের এই মনোভাবের ফলে ভীতি-হয়রানির পরিবেশের মধ্যেই রাজ্যের জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে বাধ্য হয়েছেন।
advertisement
মঙ্গলবার কলকাতায় হিংসা ও নৈরাজ্যের ঘটনার যে ব্যাখ্যা কমিশন দিয়েছে তা বিজেপি-র চাপেই করা হয়েছে বলে মনে করার কারণ রয়েছে। নির্বাচনের সময়পর্বে রাজ্য পুলিশের কমিশনের নিয়ন্ত্রণেই কাজ করার কথা। এই ঘটনার দায় কমিশনকেও নিতে হবে। সুতরাং আমরা মনে করি শুধু নির্দেশ জারি করলেই হবে না, কমিশনকে নিরপেক্ষভাবে কঠোর অবস্থান নিয়ে অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিত করতে হবে।
সিপিআই(এম) ও বামফ্রন্টের কর্মীদের কাছে আহ্বান, নির্বাচন কমিশনের ওপরে অতিরিক্ত মোহ না রেখেও নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘনের সমস্ত ঘটনা বিশদে ও দ্রুত কমিশনকে জানাতে হবে। কিন্তু আসল কাজ হল নিজের ভোট নিজে দেওয়ার জন্য জনগণকে সাহস দেওয়া ও সংগঠিত করা। ভোট লুঠের সমস্ত চেষ্টাকে প্রতিহত করে অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত করার পথে অগ্রসর হোন।’’