এদিন অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "আধার কার্ড বাধ্যতামূলক নয়। আমি সুন্দরবন জেলা করছি। এই জন্য করছি, যে আপনাদের অনেক দূরে যেতে হয়। আমি অনেক স্বাস্থ্যকেন্দ্র করছি। যাতে মানুষ চিকিৎসার ব্যবস্থা পায়।"
আজ থেকে দুদিনের সুন্দরবন সফরে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সকালেই ডুমুরজোলা হেলিপ্যাড থেকে হেলিকপ্টারে বসিরহাট পুলিশ জেলার শামসেরনগর হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডে পৌঁছন মমতা। এরপর প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্রীড়া ময়দানে একটি সভায় যোগ দেন। তারপরে শাড়ি, ধুতি, মালা, মিষ্টি ফল দিয়ে পুজো দেন বনবিবি মন্দিরে। করেন বৃক্ষপুজো।
advertisement
এদিন বনবিবি মন্দির পাকা করারও আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী। এলাকাবাসীর উদ্দেশে বলেন, মন্দির তৈরি হয়ে গেলে তিনি আবার আসবেন। তা ছাড়া, এই বনবিবি মন্দিরের সংলগ্ন এলাকার সঙ্গে কী ভাবে জলপথে যোগাযোগ করা যায়, সেই বিষয়টিতেও নজর দেওয়ার কথা বলেন তিনি। পর্যটন শিল্পের উন্নয়নের জন্য এলাকায় হোম স্টে তৈরির করার পরামর্শ দেন। একের পর এক ঘূর্ণিঝড়ে বারবার বাঁধ ভাঙে সুন্দরবনে। এ প্রসঙ্গেও উদ্বেগের সুর শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রীর গলায়। তিনি বলেন, "আমরা ১৫ কোটি ম্যানগ্রোভ লাগিয়েছি। এলাকার নদী গুলো বাঁধব। আমি কেন্দ্রের কাছে সুন্দরবন মাস্টার প্ল্যান নিয়ে একটা প্ল্যান পাঠাচ্ছি।"
চলতি মাসের শুরুতেই নদিয়া জেলা সফরে গিয়েছিলেন মমতা । সেখানেই তিনি রাজ্যে নতুন দু’টি জেলা তৈরির কথা জানান। উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার ১৯টি ব্লক রয়েছে সুন্দরবনে। যার মধ্যে ১৩টি ব্লক দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। আর ওই ১৩টি ব্লক নিয়েই সুন্দরবন জেলা হবে। অন্যদিকে, উত্তর ২৪ পরগনায় বাকি যে ছ’টি ব্লক থাকছে, সেগুলি নিয়ে তৈরি হবে বসিরহাট জেলা।
জনসংখ্যা ও এলাকার নিরিখে দুই ২৪ পরগনার সুন্দরবন লাগোয়া অঞ্চল নিয়ে প্রশাসনিক স্তরে ভাবনাচিন্তা চলছিল অনেক দিন ধরেই। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার অংশটি জেলা সদর বারাসত থেকে বেশ খানিকটা দূরে। বসিরহাটের সুন্দরবন অংশের মানুষকে বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজের জন্য জেলা সদরে যাতায়াত করতে হয়। একই সমস্যা দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্ষেত্রেও।
যদিও প্রশাসনিক কাজে সুবিধার জন্য কয়েক বছর আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনাকে তিনটি পুলিশ জেলায় ভাঙা হয়েছিল — বারুইপুর, ডায়মন্ড হারবার ও সুন্দরবন। কাকদ্বীপ, সাগর, নামখানা, পাথরপ্রতিমার বিভিন্ন থানা নিয়ে সুন্দরবন পুলিশ জেলা তৈরি হয়। গোসাবা, বাসন্তী, কুলতলি-সহ সুন্দরবনের একটা বড় অংশ পড়ে বারুইপুর পুলিশ জেলার মধ্যে। এবার নতুন জেলা ঘোষণা হওয়ায় তাঁদের দুর্ভোগ অনেকাংশেই কমবে বলে মনে করছেন সুন্দরবনের মানুষ। নতুন জেলা তৈরি হলে সাধারণ মানুষ প্রশাসনিক পরিষেবার দিক থেকেও উপকৃত হবেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।