গঙ্গা আরতি নিয়ে পুলিশের অনুমতি না থাকায় সেই মঞ্চ তৈরি করতে বাধা দেয় পুলিশ বলে অভিযোগ। যদিও বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব অনড় ছিল গঙ্গা আরিত কর্মসূচি পালন করার বিষয়ে। আর পুলিশও অনড় ছিল যেহেতু অনুমতি নেই তাই কর্মসূচি না করতে দেওয়ার জন্য। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিজেপি কর্মী সমর্থকরা জড়ো হতেই গঙ্গার ঘাটে ঢোকার মুখে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে ফেলে। মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। কেন মঞ্চ বাঁধতে দেওয়া হবে না? এই প্রশ্নে এদিন দুপুরে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন বিজেপি নেতা সজল ঘোষ। এখানেই গঙ্গা আরতি পালন করা হবে, পুলিশের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে হুঁশিয়ারি দেন সজল ঘোষ। এরপর বাজে কদমতলা ঘাট থেকেই আটক করা হয় সজল ঘোষকে।
advertisement
আরও পড়ুন- ২৩-এর বিশ্বকাপে বিরাট, রোহিতদেরই এগিয়ে রাখছেন সনৎ জয়সূর্য
অন্যান্য বিজেপি কর্মী সমর্থকরা ভিড় জমালে তাদেরও দফাই দফায় আটক করে নিয়ে যাওয়া হয় লালবাজারে। আটক করা হয় বিজেপি বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষকেও। সোমবার সকাল থেকেই বাজাকদমতলা ঘাট পুলিশি নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছিল। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার আগেই জানিয়েছিলেন, ‘‘পুলিশ অনুমতি না দিলেও আমরা গঙ্গা আরতি কর্মসূচি পালন করবই।’’
সেনাবাহিনীর তরফে আমাদের কর্মসূচির অনুমতি দিলেও কলকাতা পুলিশ রাজনৈতিক কারণেই আমাদের কর্মসূচির অনুমতি দেয়নি বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন সুকান্ত মজুমদার। একদিকে যখন নিরাপত্তার ঘেরাটোপে বাজা কদমতলা ঘাট। পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ। উপস্থিত একাধিক উচ্চপদস্থ কলকাতা পুলিশের আধিকারিকরাও। এরপরই নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামের কাছ থেকে সন্ধ্যায় পায়ে হেঁটে গঙ্গারতি করার উদ্দেশ্যে রওনা দেন সুকান্ত মজুমদার। সঙ্গে ছিলেন বিজেপির অন্যান্য নেতৃত্ব, কর্মী-সমর্থকরা। সেই সময় বাজা কদমতলা ঘাটে পুলিশ কার্যত অ্যাকশন মুডে। পুলিশকে কার্যত চোখে ধুলো দিয়ে হঠাৎ করে বাবুঘাট গঙ্গার পাড়ে পৌঁছে যান সুকান্ত মজুমদার। প্রদীপ জ্বালিয়ে শুরু করে দেন গঙ্গা আরতি। সেই সময় বাবুঘাট পুলিশ শূন্য।
আরও পড়ুন- একশো টাকা দিলেই ইউএসজি! বর্ধমান মেডিক্যালে ফের সক্রিয় দালালচক্র
সব পুলিশ কর্মী থেকে পুলিশ কর্তারা তখন বাজে কদমতলা ঘাটে সুকান্ত-সহ অন্যান্যদের গঙ্গার পাড়ে ঘেঁষতে না দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রয়েছেন। আচমকা রুটবদল করে সুকান্ত মজুমদাররা ঢুকে পড়লেন কিছুটা দূরে বাবুঘাটের গঙ্গার পাড়ে। শেষমেশ বাবুঘাটে সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালিয়ে গঙ্গারতি করেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সঙ্গে ছিলেন বিজেপির অন্যান্য কর্মী সমর্থক নেতৃত্বরা। আর বিজেপির গঙ্গা আরতি কর্মসূচি ঘিরে দিনভর তুলকালাম পরিস্থিতি তৈরি হয়। পুলিশকে কার্যত অন্ধকারে রেখেই বাবুঘাটে গঙ্গারতি কর্মসূচি পালন করার পর বাজে কদমতলা ঘাটে দলীয় কর্মী সমর্থকদের আটক করার খবর পেয়েই দলীয় কর্মী সমর্থকদের নিয়ে বাজাকদমতলা ঘাটের দিকে এগোতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। একেবারে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি। পুলিশি ধরপাকড়ের প্রতিবাদে প্রিজন ভানের সামনেই রাস্তায় বসে পড়েন সুকান্ত মজুমদার।
ধস্তাধস্তি বেধে যায় বিজেপি কর্মী সমর্থক এবং পুলিশের মধ্যে। এরপর একে একে দলীয় কর্মী সমর্থক ও অন্যান্য বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতৃত্বকে টেনে হিঁচড়ে প্রিজনভ্যানে তোলার কাজ চলছে। গোটা রাস্তা অবরুদ্ধ। একে একে বিক্ষোভকারীদের পুলিশ আটক করে নিয়ে যাচ্ছে লালবাজার। আটক করে প্রিজন ভ্যানে করে লালবাজারে নিয়ে যাওয়া হয় বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকেও। সুকান্ত-সহ সবাইকে গ্রেফতার করার পর মঙ্গলবার রাতে লালবাজার সেন্ট্রাল লকআপ থেকে ছাড়া হয় প্রত্যেককে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার পুলিশ এবং সরকারের বিরুদ্ধে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ শানিয়ে বলেন, ‘‘পুলিশ অন্যায়ভাবে আমাদের গঙ্গারতি কর্মসূচি পালনে বাধা দিয়েছে। আমাদের কর্মী সমর্থক এবং আমাকেও চরম হেনস্থা করা হয়। আমরা বলেছিলাম যে গঙ্গাআরতি আমরা করবই। শেষ পর্যন্ত পুলিশের বাধা সত্ত্বেও সেই কর্মসূচি আমরা পালন করলাম। আমরা যা বলি তা করে দেখাই।’’
