উত্তর কলকাতার সাংসদ, দক্ষিণ কলকাতার মঞ্চে দাঁড়িয়ে অবশ্য বলেছেন, " অনেকে অনেক কিছু বলতেই পারে, চারবার বিধায়ক, পাঁচ বার সাংসদ হয়েছি। এই আসন বা ওই আসন বদল করে হয়নি। আমি কলকাতা থেকেই এই সব আসন জিতেছি। সংসদীয় গণতন্ত্র ব্যবস্থাকে টুঁটি চেপে মেরে ফেলবেন না। আমরা দ্বিতীয় বৃহত্তম দল সংসদে। আমাদের যদিও একটিও সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়নি। উলটে আমাকে ফোন করে বলছে এই রাজ্যে নাকি ওদের স্ট্যান্ডিং কমিটিতে দেওয়া হয়নি। আমি বাংলা বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দোপাধ্যায় সঙ্গে কথা বলেছি। উনি বললেন ৯ জনকে দিয়েছি। এমনকি পিএসি চেয়ারম্যান দিয়েছে। ওদের কোন বিধায়ক কোন দলে আছেন সেটা দেখা আমার কাজ নয়। আপনারা সবাই একসঙ্গে থাকুন। এটাই আমাদের স্পষ্ট বার্তা।"
advertisement
আরও পড়ুন: একই প্রশ্নপত্রে MCQ ও SAQ, একই খাতায় উত্তর! ২০২৩ উচ্চ মাধ্যমিকে বড় বদল
রাজনৈতিক মহলের মতে এর মাধ্যমে একদিকে বিজেপিকে তিনি আক্রমণ করেছেন৷ অন্যদিকে নাম না করে তাপস রায়কেই টানা উত্তর কলকাতা থেকে জনপ্রতিনিধি হিসাবে জেতার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন।দলের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি মুখ খুলেছিলেন বিধায়ক তাপস রায়৷ সাংসদের বিরুদ্ধে দলের অন্যতম পুরনো বিধায়ক এ ভাবে সরব হওয়ায় স্বভাবতই অস্বস্তিতে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব৷ উত্তর কলকাতায় দলের সংগঠনের এই অভ্যন্তরীণ কোন্দল মেটাতে তাই তড়িঘড়ি উদ্যোগী হল শাসক দল৷ ইতিমধ্যেই তাপস রায়ের সঙ্গে কথা বলেছেন দলের সিনিয়র নেতারা৷
আরও পড়ুন: গোটা দেশের মতো স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা মার্চেই হবে, জম্মু-কাশ্মীর সরকারের নয়া সিদ্ধান্ত
পাশাপাশি তাপস রায়ের ক্ষোভ প্রশমনে বরানগরের বিধায়কের বাড়িতে গিয়েছিলেন দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক এবং মুখপাত্র কুণাল ঘোষ৷ বরাবর দলের শৃঙ্খলা মেনে চলা তাপসের গলায় কেন বিদ্রোহের সুর, তা জানতেই উদ্যোগী হয়েছেন তৃণমূল নেতারা৷ তৃণমূলের প্রাক্তন ছাত্র নেতা তমোঘ্ন ঘোষকে সম্প্রতি উত্তর কলকাতার সাংগঠনিক সভাপতি করে বিজেপি৷ এর পরেই তমোঘ্ন এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেই বিতর্ক শুরু হয়।গতকাল তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে সরাসরি মুখ খোলেন তাপস রায়৷ তিনি বলেন, 'তমোঘ্নকে দিদির সামনে নিয়ে গিয়েছিলেন সুদীপ বন্দোপাধ্যায়। ছাত্র পরিষদের জন্য৷ ওর বাবা তপন ঘোষ সাংসদের সচিব। কে যে কার ব্যক্তি স্বার্থে কী করেন, সেটা দেখার। সবাই সব জানে। তমোঘ্নদের বাড়িতে দুর্গাপুজো হয়, সেখানে শুভেন্দু-সুদীপ-কল্যাণ চৌবে গিয়েছিলেন। সবাই সব খোঁজ রাখেন। দলকে এখন দেখতে হবে, কাদের কাদের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা আছে। আমি ৫১ বছর ধরে রাজনীতিতে আছি। আমি অনেক কিছুই জানি৷ আমি কিন্তু চিনতে পেরেছি, চিহ্নিত করেছি।'
ক্ষোভের সঙ্গে তাপস রায় আরও অভিযোগ করেন, দলের মধ্যে থেকেই অনেকে তৃণমূলের ক্ষতি করার চেষ্টা করছেন৷ গত বেশ কিছু দিন ধরেই তাপস রায়ের গলায় বিদ্রোহ এবং হতাশার সুর শোনা গিয়েছে৷ রাজনীতি থেকে অবসরের ইঙ্গিত দেওয়া থেকে শুরু করে দলের ছাত্র নেতাদের আচরণ নিয়ে সরব হওয়া, বার বার মুখ খুলেছেন তাপস৷ মঙ্গলবার তিনি সরাসরি সুদীপের বিরুদ্ধে তোপ দাগায় বরানগরের বিধায়কের ক্ষোভ প্রশমনে উদ্যোগী হল তৃণমূল নেতৃত্ব৷