গত কয়েকদিন ধরেই তাপস রায় এবং সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে কথার লড়াই চলছে৷ যার ঝাঁঝ উত্তরোত্তর বাড়ছে৷ বিজেপি-র উত্তর কলকাতার নবনিযুক্ত সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষের পরিবারের সঙ্গে সুদীপের ঘনিষ্ঠতার প্রসঙ্গ তুলে প্রথমে সরব হন তাপস৷ অভিযোগ করেন, তমোঘ্ন ঘোষের বাড়ির দুর্গা পুজোয় একই সঙ্গে হাজির ছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারী৷
এর জবাবে সুদীপ বলেছিলেন, 'হাতি চলে বাজার, কুত্তার ভোকে হাজার৷' তৃণমূল সাংসদের এই কটাক্ষের উত্তরে আবার আজ দুপুরে তাপস রায় পাল্টা বলেন, 'আমি দুর্নীতিগ্রস্ত, হেফাজতে থাকা লোক নই৷ কোনও ব্ল্যাক স্পট নেই৷ আমরা সাদা হাতি, অনুৎপাদক নই৷ আমরা দলের ডোবারম্যান, গ্রে হাউন্ড, গ্রেট ডেন৷ আমরা দলকে সতর্ক করি, শত্রু দেখলে তেড়ে যাই৷'
advertisement
আরও পড়ুন: ফের ভিটে ছাড়া বৌবাজারের বাসিন্দারা... ঠাঁই হোটেলে! দীপাবলির মুখেই অন্ধকার মদন দত্ত লেনে
দলের প্রতি সুদীপের আনুগত্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তাপস রায়৷ কেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে সিবিআই তৎপরতা নিয়ে চুপ করে থাকেন, সেই প্রশ্ন তোলেন তাপস৷ শুধু তাই নয়, তৃণমূল সাংসদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সখ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তৃণমূল বিধায়ক৷ সুদীপকে পরাশ্রয়ী বলেও আক্রমণ করেন বরানগরের তৃণমূল বিধায়ক৷
তাপসকে জবাব দিতে দেরি করেননি সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও৷ শুক্রবার সন্ধ্যায় উত্তর কলকাতায় তৃণমূলের একটি বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে গিয়ে সুদীপ বলেন, 'ডোবারম্যান তো আর মানুষ নয়, ডোবারম্যান কুকুরই হয়৷ ১২ বছর ধরে সংসদীয় দলের নেতৃত্ব দিচ্ছি৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরে আমিই সংসদীয় দলের নেতৃত্বে রয়েছি৷ কার অনুমতি নিচ্ছি না নিচ্ছি দল বুঝবে৷'
আরও পড়ুন: উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগের ইন্টারভিউ ২১ অক্টোবর থেকে শুরু, চলবে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ! জানালো এসএসসি
এর পরে তাপসের নাম না করেই তীব্র কটাক্ষের সুরে সুদীপ বলেন, 'আমি ঠিক করেছি, কলকাতার কোনও বিধানসভা কেন্দ্র থেকে পর পর দু' বার অন্তত জিতেছে, এরকম কেউ কিছু বললেই তার জবাব দেব৷ তুলমূল্য বলে তো একটা ব্যাপার আছে৷ এর বাইরে বাকিরা আমার কাছে নন-এনটিটি৷'
তাপস রায়কে সরিয়ে উত্তর কলকাতার তৃণমূলের সভাপতি করা হয় সুদীপকে৷ দলীয় সূত্রে খবর, এর পর থেকেই দু' জনের মধ্যে সংঘাতের সূত্রপাত৷ দুই নেতার মুখে লাগাম পরাতে ইতিমধ্যে সক্রিয় হয়েছে দল৷ বুধবারই তাপস রায়ের বাড়িতে যান তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ৷ যদিও তার পরেও দুই নেতার কেউই পরস্পরকে আক্রমণের রাস্তা থেকে সরছেন না৷ দলের বিধায়ক- সাংসদকে বাগে আনতে এবার তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব কঠোর কোনও পদক্ষেপ করে কি না, সেটাই এখন দেখার৷