এর পর একাধিক বার বিধায়ক নির্বাচিত হয়ে রাজ্য বিধানসভায় গিয়েছেন৷ রাজ্য রাজনীতির অপরিহার্য মুখ হয়ে উঠেছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায় (Subrata Mukherjee Expires) ৷ কখনও কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে এসে মেয়র হয়েছেন, আবার সেই তৃণমূলের সঙ্গে মতবিরোধে ফিরে গিয়েছেন কংগ্রেসে৷ ২০০১ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত কলকাতা পুরসভার মেয়র ছিলেন সুব্রত৷ কলকাতার ৩৬ তম মেয়র ছিলেন তিনি৷
advertisement
আরও পড়ুন: প্রয়াত রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়
সুব্রত মুখোপাধ্যায় (Subrata Mukherjee) বরাবরই বঙ্গ রাজনীতিতে এক অন্যরকম চরিত্র৷ ১৯৭১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বালিগঞ্জ থেকেই জিতে প্রথম বার বিধায়ক হয়েছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়৷ এর পর জোড়াবাগান, চৌরঙ্গী কেন্দ্র থেকেও বিধায়ক হয়েছেন৷ কিন্তু ২০১১ সাল থেকে অবশ্য বালিগঞ্জ কেন্দ্র থেকে তাঁর জয় একরকম নিয়মে পরিণত হয়েছিল৷ মাঝে ২০১৯ সালে বাঁকুড়া কেন্দ্র থেকে লোকসভা নির্বাচনে লড়তে গিয়ে অবশ্য পরাজিত হন সুব্রত৷
গত দশ বছর ধরে রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরের ভারও তাঁর বিশ্বস্ত হাতে দিয়েই নিশ্চিন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ যার সুফলও তৃণমূল পেয়েছে হাতেনাতে৷ এবারেও গ্রাম বাংলায় নিরঙ্কুশ দাপট দেখিয়েছে রাজ্যের শাসক দল৷ ১০০-র বেশি আসনে জিতেছে তারা৷ যার বড় কৃতিত্ব অবশ্যই সুব্রতর হাতে থাকা পঞ্চায়েত দফতরের৷
আরও পড়ুন: 'সুব্রত দা'র দেহ দেখতে পারব না', পুজো ফেলে হাসপাতালে ছুটে এলেন মমতা
শুধু পঞ্চায়েত দফতর নয়, বাম আমলে মাত্র পাঁচ বছর কলকাতা পুরসভার মেয়র হয়ে শহরের ভোলবদলের কৃতিত্ব দেওয়া হয় সুব্রতকে৷ কর আদায় বৃদ্ধি থেকে শহরের পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতা বা পুরসভার কর্মসংস্কৃতিতে বদল আনা, মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন সুব্রত৷ তৃণমূলের রাজনৈতিক সংঙ্কট হোক বা সরকারের প্রশাসনিক কোনও সমস্যা, জরুরি পরামর্শ দিয়ে সবক্ষেত্রেই ক্রাইসিস ম্যানেজার হয়ে উঠেছিলেন সবার প্রিয় সুব্রতদা৷
ষাটের দশকে কংগ্রেসি ঘরানার রাজনীতিতে হাতেখড়ি। শুরু করেছিলেন ছাত্র রাজনীতি দিয়েই। প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির সঙ্গেই উত্থান তাঁর। প্রয়াত সোমেন মিত্রের অত্যন্ত আস্থাভাজন ছিলেন সুব্রত৷ প্রিয়- সৌমেন- সুব্রতর নাম একসময় বাংলার রাজনীতিতে একসঙ্গে উচ্চারিত হত৷
ইন্দিরা গান্ধির সঙ্গেও সুব্রত মুখোপাধ্যায় যোগাযোগ ছিল নিবিড়। ইন্দিরা যেদিন মারা যান, সেদিন রাজীব গান্ধির পাশে ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজনীতিতে আনার পিছনে চাণক্য বলে যাঁদের মানা হয়, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সি অনেক দিন আগেই প্রয়াত হয়েছেন৷ সোমেন মিত্রের মৃত্যুতেও মানসিক ভাবে আঘাত পেয়েছিলেন সদাহাস্য সুব্রত৷ দুই অগ্রজের মতো এবার নিজেও চিরঘুমের দেশে পাড়ি দিলেন সুব্রত!
