করোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় লকডাউন পঞ্চম পর্বে পড়েছে। এই পর্বে এসে সরকার অনেক ক্ষেত্রে ছাড়া দিয়েছে। তবে এখনও বন্ধ রয়েছে স্কুল কলেজ। জুন মাসেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার তেমন কোনও সম্ভাবনা নেই। এই পরিস্থিতিতে সব স্কুল ছাত্র ছাত্রীদের জন্য অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করে। গুগলের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম সহ একাধিক অ্যাপের মাধ্যমে ক্লাস নিচ্ছে শিক্ষক শিক্ষিকারা। এইসব অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলো সম্পর্কে অনেক বেশি অবগত পড়ুয়ারা। এর সুযোগ নিয়ে ক্লাস রুমে বসে যে বদমাইশি করা সম্ভব হয় না তাই ভার্চুয়াল ক্লাসে করছে ছাত্র ছাত্রীরা। কখনও শিক্ষা বা শিক্ষিকার ভয়েস মিউট করে দিচ্ছে। কেউ আবার নিষেধ করা সত্ত্বেও নিজের ভয়েস অন করে তারস্বরে অরিজিৎ সিংয়ের গান শুনছে।
advertisement
নিউটাউনের একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক বলেন, 'এগুলো খুব সামান্য ব্যাপার। এর থেকেও ভয়ঙ্কর কাজকর্ম করছে ছাত্রছাত্রীরা।' তিনি জানান, 'আমাদের ক্লাস হচ্ছে গুগল মিট অ্যাপে। সেখানে প্রতিদিন এক একটা ক্লাসের জন্য নতুন লিঙ্ক তৈরি করা হয়। সেই লিঙ্কগুলোকেই হ্যাক করে ফেলছে ছাত্র ছাত্রীরা।'
কিন্তু হ্যাক করে করছেটা কি? ওই লিঙ্ক একাধিক বেনামী অ্যাকাউন্ট খুলে এখন ঢুকে পড়ছে অন্যরা। সম্ভবত তারা ওই স্কুলের ছাত্র নয়। এরপর ক্লাস চলাকালীন কমেন্ট বক্সে চলছে শিক্ষক শিক্ষিকাদের নিয়ে বিভিন্ন রকম মন্তব্য। শিক্ষককে মিউট করে দিয়ে নিজেদের মধ্যে গল্প গুজবে মেতে উঠছে তারা। অনেক সময় ক্লাস শেষ হয়ে যাওয়ার পর ওই লিঙ্ক ব্যবহার করে চলছে দীর্ঘ সময় আড্ডা। দক্ষিণ কলকাতার এক নামী স্কুলের শিক্ষক শোনালেন তার এক অন্য অভিজ্ঞতার কথা। তিনি বলেন, 'আমার ক্লাসে ক্লোন অ্যাকাউন্ট খুলে একজন অভিভাবকও ঢুকে বসে ছিলেন।' তিনি মজা করে বলেন, 'সম্ভবত ওনার ছাত্র জীবন ভার্চুয়াল ক্লাসের অভিজ্ঞতা না থাকায় ছেলের সঙ্গে তিনিও বসে পড়েছিলেন ক্লাস করতে।'
এর বাইরেও আরও কিছু অসাধারণ অভিজ্ঞতা কথা শোনালেন ওই শিক্ষক। অনেক সময় অনেক ছাত্রের হঠাৎ করে ভিডিও উইন্ডো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর ভিডিও অন হলে দেখা যাচ্ছে ওই ছাত্র বাথরুমে ব্যস্ত। নিচু ক্লাসে ক্লাস চলার সময় কোনও প্রশ্নের ছাত্র ছাত্রীরা উত্তর দিতে না পারলে পাশ থেকে অভিভাবকের ভৎর্সনার কন্ঠ ভেসে আসছে শিক্ষক শিক্ষিকাদের কানে।
Soujan Mondal