সম্প্রতি মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র ভোটকে ঘিরে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলিও ছাত্র ভোটের দাবি নিয়ে সোচ্চার। এমনকী, রাজ্যের শাসক দলের ছাত্র সংগঠনও চাইছে অবিলম্বে ছাত্র ভোট হোক।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, "আমরাও রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে ছাত্র ভোট চাই। কিন্তু কবে ছাত্র ভোট করা হবে, সেটা অবশ্যই রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা আমাদের দাবি রাজ্য সরকারের কাছে রেখেছি।"
advertisement
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে ছাত্র ভোটের প্রস্তুতি শুরু করা হলেও, পরে করোনা পরিস্থিতির কারণে ছাত্র ভোট বন্ধ করে দেওয়া হয়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় ও রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ভোট হয়েছিল। এর মধ্যে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় টিএমসিপি ছাত্র সংসদ ধরে রেখেছিল। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাস প্রতিনিধির একাধিক আসনে জয় পেয়েছিল শাসক দলের ছাত্র সংগঠন। তবে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় উল্লেখযোগ্য ফলাফল করেছিল ছাত্র সংগঠন এসএফআই।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে ছাত্র ভোটের প্রক্রিয়া শুরু করা গেলেও পরবর্তী সময়ে করোনা পরিস্থিতির কারণে কলেজগুলিতে আর ছাত্র ভোট করাতে পারিনি রাজ্য। যদিও শেষ বার পুরোদমে ছাত্র ভোট হয়েছিল ২০১৬ এর শেষ দিক ও ২০১৭ এর শুরুতে। ওই সময় রাজ্যজুড়ে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে ছাত্র ভোট হয়েছিল। তারপর থেকে দীর্ঘদিনই রাজ্যের কলেজগুলিতে ছাত্র ভোট করানো যায়নি।
এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এসএফআই রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, "আমরা চাই অবিলম্বে ছাত্র ভোট। দীর্ঘদিন রাজ্যের কলেজগুলিতে ছাত্র ভোট হয়নি। তার জেরে ছাত্র সংসদ গুলো দীর্ঘদিন কার্যকরী হচ্ছে না। আমরা প্রস্তুত ছাত্র ভোটের জন্য।" সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেই ছাত্র ভোটের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে সেক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত ছাত্র ভোট নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতর।
দফতরের আধিকারিকদের ব্যাখ্যা ছাত্র ভোট করাতে গেলে ন্যূনতম ২১ দিন আগে নির্দেশিকা জারি করতে হবে। শুধু তাই নয় বিশ্ববিদ্যালয় গুলিকেও ছাত্র ভোটের জন্য বিশেষ প্রস্তুতি নিতে হবে। এর জন্য প্রয়োজনীয় অ্যাডভাইজারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দেবে উচ্চশিক্ষা দফতর। সেক্ষেত্রে প্রস্তুতি নিতেই বেশ কিছুটা সময় লাগবে। ছাত্র ভোট করাতে গেলে মাথায় রাখতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পরীক্ষা নেওয়ার সময়সূচীও। ছাত্র ভর্তি কেও মাথায় রাখতে হবে ছাত্র ভোট করানোর জন্য।
আরও পড়ুন, ২০ জনকে বিয়ে, বাদ যায়নি নিজের মেয়েও! ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে হতবাক পুলিশও
বর্তমানে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলিতে সেমিস্টার সিস্টেমে পরীক্ষা নেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে একাধিক বিষয়কে মাথায় রেখেই রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে ছাত্র ভোট করাতে হবে রাজ্যকে।
সে ক্ষেত্রে আগাম প্রস্তুতি না নিলে ছাত্র ভোট করানো সম্ভব নয় বলেই মেনে নিচ্ছেন উচ্চশিক্ষা দফতরের আধিকারিকরা। যদিও রাজ্যের একাধিক ছাত্র সংগঠন পঞ্চায়েত ভোটের আগেই ছাত্র ভোট করানোর দাবি নিয়ে সরব।