এমনিতে লকডাউনে কলেজ বন্ধ। তবে কলেজের অফিস ঘর যেন তৈরি হয়েছে কন্ট্রোল রুম হিসেবে। দিনের বেশিরভাগ সময় কয়েকজন ছাত্র কিংবা অফিস কর্মী সেই ঘরে বসছেন। সাহায্যের জন্য ফোন আসলে লিখে নেওয়া হচ্ছে নাম, ঠিকানা। সংশ্লিষ্ট জায়গায় দায়িত্বে থাকা ছাত্রছাত্রীকে পাঠানো হচ্ছে সেই ব্যক্তির বাড়ি। সত্যিই সাহায্য প্রয়োজন কিনা আর প্রয়োজন হলে কি ধরনের সাহায্য প্রয়োজন সেটা প্রথমে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তারপর সেই ছাত্র-ছাত্রী প্রয়োজন অনুযায়ী খাদ্য সামগ্রী অসহায় মানুষদের হাতে তুলে দিচ্ছেন। অনলাইনে কলকাতা থেকে সেই ছাত্র-ছাত্রী একাউন্টে পৌছে যাচ্ছে টাকা। সেই অর্থ দিয়ে সব কেনা হচ্ছে। রক্তের প্রয়োজন হলেও ফোন আসছে হেল্পলাইন নাম্বারে। সংশ্লিষ্ট জায়গার ব্লাড ব্যাংকে গিয়ে দায়িত্বে থাকা ছাত্রছাত্রীরা রক্ত দিচ্ছেন। পরিবর্তে প্রয়োজনীয় গ্রুপ অনুযায়ী রক্ত নিয়ে পৌছে দেওয়া হচ্ছে অসুস্থ ব্যক্তির পরিবারের হাতে। এই মহা কর্মকাণ্ডের জন্য প্রাক্তন,বর্তমান প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রী নিজেদের সাধ্যমত অনুদান দিয়েছেন। কলেজের ছাত্র সংসদের পক্ষ থেকে 1 লক্ষ টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে। শিক্ষক,শিক্ষিকার সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন। প্রয়োজনে আরও সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষের তরফে। আশুতোষ কলেজ পরিবারের উদ্যোগের পাশে রয়েছেন গভর্নিং বডির সভাপতি সাংসদ সৌগত রায়। ভিডিও বার্তায় এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তিনি।
advertisement
গত 7 দিন ধরে কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ হয়ে কালীঘাটের যৌনপল্লী,বজবজ থেকে সুন্দরবন আশুতোষ কলেজ পরিবার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এখনো পর্যন্ত 18টি জেলার 243 টি পরিবারের, 951জন মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে খাদ্য সামগ্রী। রক্ত পৌঁছে দেওয়া হয়েছে 4জন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশু, 5জন ক্যানসার রুগী ও 3জন মুমূর্ষু ব্যক্তিকে। এর বাইরেও হাজরা, কালীঘাট এলাকার কুকুরের খাবার দেওয়ার দায়িত্ব পালন করছেন ছাত্র-ছাত্রীরা। সব মিলিয়ে আশুতোষ কলেজ পরিবার নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে সমাজের কাছে।
