ইডির হাতে গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে হাজতবাস করছেন প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁকে মন্ত্রিত্ব ও দলের সব পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর জায়গায় পরিষদীয় মন্ত্রী হয়েছেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। ফলে, বিধানসভার সরকারি বেঞ্চে রদবদল করতে হয়।
বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর জন্য ২০০ নম্বর আসনটি বরাদ্দ। তারপরের ২০১ নম্বর আসনটি ফাঁকা রাখা থাকে। পার্থ চট্টোপাধ্যায় পরিষদীয় মন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর আসন ছিল ২০২ নম্বর আসনে। চিরাচরিত রীতি অনুযায়ী, এই আসনটিই বিধানসভায় দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ আসনের মর্যদা পেয়ে আসছে।
advertisement
আরও পড়ুন: বিধানসভায় আজ মুখোমুখি মমতা-শুভেন্দু! 'কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা' ইস্যুতে উঠবে ঝড়
পরিবর্তিত বিন্যাস অনুযায়ী আজ এই আসনে বসবেন ফিরহাদ। তবে, মন্ত্রিত্ব হারালেও, বেহালা পশ্চিমের তৃণমূল বিধায়ক এখনও পার্থ। তাই, বিধানসভায় তাঁর জন্য নতুন আসন বরাদ্দ করা হয়েছে। পার্থর আসন বদলের সিদ্ধান্ত হওয়ার পর, ট্রেজারি বেঞ্চে কোথায় তাঁর আসন দেওয়া যায়, তা নিয়ে বিস্তর চর্চা হয়েছে সরকারি মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষের দফতরে৷
সূত্রের খবর, তৃণমূলের কোনও বিধায়কই নাকি তারঁ পাশের আসনটি পার্থর জন্য বরাদ্দ হোক, তা চাইছিলেন না। গোপনে এই আপত্তির কথা তাঁরা মুখ্য সচেতকের দফতরকেও জানিয়েও দিয়েছিলেন। ফলে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জন্য নতুন আসনটি চূড়ান্ত করতে বেশ বেগ পেতে হয় বিধানসভাকে।
শেষমেশ, পার্থর জন্য নির্দিষ্ট হয় ২৭২ নম্বর আসনটি। পার্থর এই আসনের ঠিক পাশের ২৭১ নম্বর আসনটি কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রের। আর, ২৭৩ নম্বর আসনটি বিধানসভার উপ- মুখ্য সচেতক তাপস রায়ের। অধিবেশন শুরু থেকেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আসনটি ফাঁকা। কিন্তু, পর্যবেক্ষকদের দাবি, কাল বিধানসভায় রাজনৈতিক মহলের দৃষ্টি থাকবে ওই আসনের দিকে।
তাঁর আসনের পাশের আসনটি পার্থকে বরাদ্দ করা নিয়ে মদন বলেন, 'সবাই মমতা বন্দোপাধ্যায়কে দেখতে আসেন। তাঁর আসনেরই খোঁজ রাখেন, সদনে বাকি আসনে কে, কোথায় বসল, তা নিয়ে কেউ ভাবেন না।' যদিও, ঘনিষ্ঠ মহলে মদন বলেছেন, ওঁর (পার্থ চট্টোপাধ্যায়) থেকে যত দূরে থাকা যায় ততই ভাল।
তৃণমূলের দলীয় রসায়নে মদনের সঙ্গে পার্থর সম্পর্কের বিশেষ কোন মাত্রা নেই। তবে, তাপস রায়ের বিষয়টি নাকি একটু আলাদা। পরিষদীয় রাজনীতির আসরে তাপস - পার্থর মধ্যে ঊষ্ণতার রকমফের ছিল। সেটা সবারই জানা। তবে, এখন আর এই আসন বরদ্দ করাকে বাড়তি গুরুত্ব দিতে চান না তাপস। তাপসের মতে, 'এটা বিধানসভার ব্যাপার। স্পিকার, মুখ্য সচেতকরা ঠিক করেন, সদস্যরা কে কোথায় বসবেন। এ নিয়ে আমার কোন বক্তব্য নেই।'
তবে, যাই হোক, রসিকজনরা বলছেন, যাঁরাই আসন পুনর্বিন্যাস করুন না কেন, তাদের রসবোধ নিয়ে কোনও প্রশ্ন থাকতে পারে না। কারণ, একটাই লাভলি মদনের পাশে এবার পার্থ। দুইয়ে মিলে ''লাভলি- পার্থ "। হোক না তিনি অদৃশ্য। বিধানসভায় পার্থর কায়া না থাকলেও, ছায়াটাতো থাকবে। সেটাই বা কম কী?