এ ছাড়া, মনোজিৎ সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের টিএমসিপি ইউনিটের প্রাক্তন প্রেসিডেন্টও ছিল। নিজের পেশাগত পরিচয় হিসাবে উল্লেখ করেছে আলিপুর আদালতে ‘ক্রিমিনাল লইয়ার’ বা ফৌজদারি আইনজীবী।
জানা যাচ্ছে, বেশ কয়েকদিন ধরে যুব প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য চেষ্টা করছিল মনোজিৎ। কলেজে থাকাকালীনও যথেষ্ট দাপুটে নেতা ছিল সে। এমনকি মারধরের ঘটনাতে নামও জড়িয়েছে বেশ কয়েকবার।
advertisement
মনোজিৎ ছাড়া আরও যে দু’জন অভিযুক্ত রয়েছেন তারা একজন প্রথম বর্ষের ও একজন দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া। অভিযোগ, বাকি দুই ধৃতও টিএমসিপির সঙ্গে সক্রিয় ভাবে যুক্ত। জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা ছাত্রী প্রথম বর্ষের ছাত্রী। তাঁর বাড়ি দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায়।
কয়েকটি সূত্র দাবি করছে, ওই ছাত্রীকে জিএস করার টোপ দিয়ে কলেজে ডেকে এনেছিল মূল অভিযুক্ত। পরে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। ওই ছাত্রী তা অস্বীকার করে ইউনিয়ন রুম থেকে বেরিয়ে যেতে চায়। তখনই গার্ডরুমে জোর করে ঢুকিয়ে তার উপরে অত্যাচার করা হয় বলে অভিযোগ৷ যদিও এসবই বর্তমানে শোনা যাচ্ছে৷ আসল ঘটনাক্রম বিস্তারিত জানায়নি পুলিশ৷
পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগপত্রে ওই ছাত্রী জানিয়েছেন, গত বুধবার, ২৫ জুন সন্ধে সাড়ে ৭টা থেকে ২২টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত কলেজের একটি ঘরে তাঁকে টেনে নিয়ে গিয়ে তাঁর উপর অত্যাচার চলে৷ এরপরে গতকাল, অর্থাৎ, ২৬ জুন বৃহস্পতিবার কসবা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই ছাত্রী৷ এরপরে তদন্তের জন্য পার্ক সার্কাসের CNMC হাসপাতালে ওই ছাত্রীর প্রাথমিক শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়েছে৷ প্রত্যক্ষদর্শীদেরও শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়েছে ও তাঁদের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে৷
আরও পড়ুন: কলকাতার কলেজে গণধর্ষণের অভিযোগ! কড়া পদক্ষেপ CU-র, তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট চাইল কমিশন
পুলিশ জানিয়েছে, এফআইআরে নাম থাকা দু’জনকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গ্রেফতার করা হয়। তালবাগান ক্রসিংয়ের কাছে সিদ্ধার্থশঙ্কর শিশু রায় উদ্যানের সামনে থেকে সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে এক জনকে এবং ৭টা ৩৫ মিনিটে এক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় তৃতীয় অভিযুক্তকে। তৃতীয় জনই মনোজিৎই মূল অভিযুক্ত বলে অভিযোগ৷ অভিযুক্ত তিন জনের কাছ থেকেই নিয়ে নেওয়া হয়েছে তাঁদের মোবাইল ফোন। অভিযুক্ত ৩ জন এবং নির্যাতিতার নাম পরিচয় আড়াল রেখেছে পুলিশ৷
এই ঘটনার পর শাসকদলকে একযোগে আক্রমণ শুরু করেছে বিরোধীরা। কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিরোধ দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী৷ টিএমসিপি জানিয়েছে, ধৃতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।