পাকিস্তানের করাচির বাসিন্দা জাভেরিয়া খানম তার প্রেমিক শামীর খানকে বিয়ে করতে ৪৫ দিনের ভিসায় ভারতে এসেছেন। জাভেরিয়া বাবা পেশায় হোমিওপ্যাথি ডাক্তার। পেশায় ব্যবসায়ী সমীর। মঙ্গলবার ওয়াঘা-আটারি আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ভারতে পৌঁছেছেন তিনি। আগামী বছরের জানুয়ারিতে কলকাতায় প্রেমিক সমীর খানকে বিয়ে করবেন বলে জানা গিয়েছে। জাভেরিয়াকে স্বাগত জানাতে সমীর ও তাঁর পরিবারের কয়েকজন সদস্য ওয়াঘা-আটারি সীমান্তে পৌঁছেছেন। তাঁকে স্বাগত জানানোর আয়োজনও ছিল চোখে পড়ার মতো। একেবারে বলিউডি কায়দায়, স্বাগত জানানো হয় জাভেরিয়াকে। একদিকে ফুলের বৃষ্টি, অন্যদিকে নানা বাদ্যির আওয়াজ। পরে জুটিতে তাঁরা অমৃতসর থেকে কলকাতার ফ্লাইট ধরতে চলে যান।
advertisement
আরও পড়ুন: শরীরে ১১টা সার্জারি শাহরুখের! কিন্তু তারপরেও… ভক্তের পোস্টে হঠাৎ বাদশার উত্তর, নেটপাড়ায় হইচই
জাভেরিয়া খানুম গণমাধ্যমকে জানান, ভারতে আসার জন্য তিনি নিরন্তর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তার দুটি ভিসার আবেদন প্রত্যাখ্যান করে। কোভিডের কারণে, তাদের পরিকল্পনা প্রায় পাঁচ বছর ধরে আটকে ছিল। তিনি বলেন, “আমাকে ৪৫ দিনের জন্য ভিসা দেওয়া হয়েছে। আমি এখানে এসে খুবই খুশি। আমি এখানে আসার পর থেকে এত ভালোবাসা পাচ্ছি তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই আমাদের বিয়ে। তবে আমি এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না, যে পাঁচ বছর পর আমি ভিসা পেয়েছি। আমার বাড়ির সবাইও খুব খুশি।”
কলকাতার পাকিস্তানি তরুণীর সঙ্গে বিয়ে প্রসঙ্গে সমীর খান বলেন, ‘আমি পড়াশোনার জন্য জার্মানিতে থাকতাম। তারপর আমি ২০১৮ সালে সেখান থেকে বাড়িতে আসি। তখন থেকেই আমরা একে অপরকে চিনি। আমি আমার মায়ের ফোনে ওঁর একটি ছবি দেখেছিলাম। তারপর মাকে বলেছিলাম যে আমি ওকেই বিয়ে করব। তবে একে অপরকে জানার ছয় বছর পর আমরা বিয়ে করছি।”
জাভেরিয়া বলেন, “যেহেতু বিয়ে তাই উভয় পরিবারের লোকজনই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে চায়। বাড়িতে আমার বাবা, মা এবং চার ভাইবোন আছে। তাঁরা সব সময়ই ভাবত কী ভাবে আমাদের দেখা হবে। আমরা ভিসার জন্য দুবার আবেদন করেছিলাম। কিন্তু যেহেতু ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়াটি আইনি দিক থেকে বেশ কঠিন তাই দুবার না পাওয়ার পর, অবশেষে এই ৪৫ দিনের জন্য ভিসা পেলাম।”
তিনি আরও বলেন, ” আমি ভারত সরকারকে অনেক ধন্যবাদ জানাই আমাকে ভিসা পেতে সাহায্য করার জন্য। আমি অমৃতসর থেকে কলকাতায় ফ্লাইটে এসেছি। যখন নামলাম, তখন চারিদিকটা দেখে খুবি ইচ্ছে করছিল ঘুরতে। কিন্তু সে সুযোগ পাইনি তবে চেয়েছিলাম।”
ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়ে দুজনেই খুব আশাবাদী। তাঁরা বলেন, “দুই দেশের মানুষ খুবই ভাল। যখন আমাদের ভিসার প্রয়োজন হয় তখন ভারত সরকার আমাদের অনেক সাহায্য করেছিল। যারা অবৈধভাবে প্রবেশ করেন তাঁদের জন্য সাধারণ মানুষদের হয়রানির হয়।”
জাভেরিয়া খানম জানান, তার বিয়েতে জার্মানি, আফ্রিকা, স্পেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সহ অন্যান্য দেশ থেকে তার বন্ধুরা আসবেন। কিন্তু ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট ম্যাচ হলে স্ত্রী কোন দেশের পক্ষ নেবেন? হাসিমুখে বাউন্সার এড়িয়ে যান সমীর। তিনি বলেন, “জাভেরিয়া খুব ক্লান্ত। আমি মনে করি দুই দেশের মধ্যে বিয়ের জন্য আলাদা ভিসা ব্যবস্থা থাকলে ভাল হবে। তবে নিরাপত্তা সবার আগে।”
তাঁদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার উত্তর দিতে গিয়ে সমীর বলেন, “৬ বছর ধরে সংগ্রাম করার পর অবশেষে ও আমার পাশে বসেছে, আমরা জানুয়ারিতে বিয়ে করব। আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আমরা তার ভিসার মেয়াদ বাড়াতে চাই।”
