তাঁদের উদ্যোগে ত্রিনয়নীর আরাধনা এ বার পূর্ণ করল তিন বছর ৷ গত বছর অতিমারির তীব্র হানার মধ্যেও বিচ্যুতি ঘটেনি মাতৃ আরাধনায় ৷ সে বার পুজো হয়েছিল, স্নেহদিয়া বৃদ্ধাশ্রমের ঠিক মুখোমুখি নিউটাউনের স্বপ্নভোর পার্কে ৷ এ বছর অবশ্য প্রথম বারের মতোই মা সপরিবার এসেছেন স্নেহদিয়া বৃদ্ধাবাসের অঙ্গনেই ৷
মায়ের ইচ্ছে হয় বলেই তিনি আসেন৷ মা-ই সব করিয়ে নেন৷ মনে করেন পুজোর অন্যতম কর্মকর্তা ভাস্কর সরদার ৷ হিডকোর সহায়তায় সিনিয়র সিটিজেনদের সংগঠন স্বপ্নভোর-এর সদস্য এবং স্নেহদিয়া বৃদ্ধাবাসের আবাসিকদের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় বাস্তবায়িত হয় এই দুর্গোৎসব ৷ জানালেন তিনি ৷
advertisement
আরও পড়ুন : ঢাক ও কাঁসরের সঙ্গে আলোকসজ্জা, শারদোৎসবে অচেনা রূপে হাওড়া-শিয়ালদহ-কলকাতা-আসানসোল স্টেশন
সাবেক সাজের প্রতিমার পাশাপাশি এই পুজোর সর্বত্র ছড়িয়ে আছে একান্ত ঘরোয়া মেজাজ ও আন্তরিকতা ৷ শুধু বহিরঙ্গেই নয়, অন্তরমহলেও এই পুজো আদ্যন্ত পারিবারিক এবং ঘরোয়া ৷ কারণ এই পুজোর জন্য কোনও চাঁদা তোলা হয় না ৷ নেই কোনও স্পনসরও ৷ সংস্থার সদস্যরাই নিজেদের মধ্যে সব দায়িত্ব ভাগ করে নেন ৷ আবাহন থেকে নিরঞ্জন, দুর্গাপুজোর প্রতি ধাপেই থাকে স্নেহদিয়া বৃদ্ধাবাসের আবাসিকদের সক্রিয় উপস্থিতি ৷
গত বছরে মতো এ বারও কঠোর কোভিডবিধি মেনে পালিত হচ্ছে দুর্গাপুজো ৷ পুজো প্রাঙ্গণে কার্যত প্রবেশ নিষিদ্ধ বহিরাগতদের ৷ সংস্থার সদস্যরাও মণ্ডপে পা রাখছেন মাস্ক পরেই ৷ পালিত হচ্ছে অন্যান্য সতর্কতাও ৷ তবে একইসঙ্গে বজায় আছে পুজোর সবরকম রীতিনীতি ও ঐতিহ্য ৷
আরও পড়ুন : বৃষ্টির আশংকা-করোনা আতঙ্ক! সাঁড়াশি চাপে নবমীর সকালেই পথে দর্শনার্থীদের ঢল...
সেই ঐতিহ্য মেনেই মহাষ্টমী ও মহানবমীর সন্ধিক্ষণে হল সন্ধিপুজো ৷ বাইরে অঝোর বর্ষণের মাঝে জ্বলে উঠল ১০৮ টি প্রদীপ ৷ সন্ধ্যারতির আলোয় উদ্ভাসিত চারদিক ৷ আগুনের সেই পরশমণির ছোঁয়া পুজোর উদ্যোক্তাদের প্রাণেও ৷ সেই স্পর্শেই তাঁরা প্রমাণ করেছেন বয়স শুধুমাত্র একটি সংখ্যা ৷ বার্ধক্য মানে সমুদ্রের অন্তহীন ঢেউ গুনে যাওয়া নয় ৷ বরং, জীবনের এই পর্বেও গাওয়া যায় জীবনের আনন্দসঙ্গীত ৷