নিয়োগ দুর্নীতিতে কিছু মাস আগে গ্রেফতার হন কৌশিক ঘোষ। নিয়োগ দুর্নীতিতে সেই কৌশিকের এজেন্ট হিসাবে কাজ করতেন জীবন কৃষ্ণ সাহা। পরে জীবন নিজের অধীনে বহু এজেন্ট রেখে কোটি কোটি টাকা তুলে নিজেই চাকরি বিক্রির মূল পান্ডা হয়ে ওঠে। দু'জনই মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। সিবিআই সূত্রে খবর, কৌশিকের বাবা বিধানসভা ভোটের ক্যাম্পেনিং সময় জীবন কৃষ্ণকে " নিজের ব্যাটা " ( ছেলে ) হিসাবেও সকলের সামনে পরিচয় দিতেন। দুই পরিবারের এতটাই সুসম্পর্ক ছিল।
advertisement
আরও পড়ুন: চাকরি বিক্রিতে কে গুরু, কে শিষ্য? জীবন কৃষ্ণ ও কৌশিকের কাণ্ড শুনে চোখ কপালে দুঁদে গোয়েন্দাদেরও!
সিবিআই সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, বর্ধমান সহ বিভিন্ন জায়গায় চাকরি বিক্রির ব্যবসা চালাত কৌশিক ও জীবন। সিবিআই ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে খবর, এই কৌশিক ঘোষ এক সময় বহু বছর সরকারি দফতরে চাকরি করতেন। কৌশিক শিক্ষিত যুবক। কিন্তু কিছু দিন পরে চাকরি ছেড়ে দেন। সিবিআই সূত্রে খবর, বীরভূমে বালির ঘাট চালাতেন কৌশিক। কিন্তু নিয়োগ দুর্নীতিতে এত লাভ-মুনাফা দেখে কৌশিকের মূল ব্যবসা এটাই হয়ে ওঠে। এরপর কৌশিকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু এজেন্ট হিসাবে জীবন কৃষ্ণ সাহাকে রাখেন।
আরও পড়ুন: এতবড় ধাপ্পাবাজি! জীবনকৃষ্ণের চাকরি নিয়ে যা জানল সিবিআই, জানলে মাথায় হাত পড়বে যে কারও
এই শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে চাকরি চুরির পান্ডা হয়ে ওঠার পর সে তাঁর অধীনে এজেন্ট হিসাবে জীবন কৃষ্ণ সাহাকে রাখেন। কারণ কীভাবে গোটা বিষয়ে চাকরি বিনিময়ে কোটি কোটি টাকা আয় করতে হবে তার জন্য ক্ষমতায় থাকা জীবনকেই বেছে নেন কৌশিক। কৌশিক বড় মাপের দুর্নীতির পান্ডা। যাকে কিছু মাস আগে সিবিআই গ্রেফতার করেছিল নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়। কৌশিকের এজেন্ট হিসাবে জীবনের কাজ করতে করতে ধীরে ধীরে লালসা বাড়ে। পরে ক্ষমতাও বাড়ে। রাজনৈতিক ভাবে বিধায়ক হওয়ায় এলাকায় ভাল ক্ষমতায় ছিল। জীবন কৃষ্ণও এরপর নিজেই দুর্নীতির পান্ডা হয়ে ওঠে। নিজে চাকরি বিক্রির আলাদা করে জাল চালাতে থাকে।
সিবিআই সূত্রে খবর, জীবন কৃষ্ণ সাহার বিভিন্ন জেলায় বহু এজেন্ট রয়েছে। বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ সহ বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে এজেন্ট। বেশ কিছু এজেন্টের নাম সিবিআইয়ের হাতে এসেছে। তাদেরকে তলব করবে সিবিআই। অর্থাৎ এজেন্ট হিসাবে কৌশিকের অধীনে জীবন কাজ শুরু করলেও, পরবর্তীকালে নিয়োগ দুর্নীতির সাম্রাজ্য জীবন নিজেই বিস্তার করে। নিজেই চাকরি বিক্রির চক্র বিস্তার করার জন্য রাখে বহু এজেন্ট। তাদের কমিশন দেওয়া শুরু করে। প্রাইমারি - আপার প্রাইমারি, নবম দশমের বেনিয়ম করে চাকরি করে দেওয়া থেকে কোটি কোটি টাকা তুলতে থাকেন বিধায়ক জীবন কৃষ্ণ সাহা, দাবি সিবিআইয়ের।
অর্পিতা হাজরা