গতকাল বরানগরে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন সৌগত রায়৷ সেখানে উপস্থিত ছিলেন বরানগর পুরসভার চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিকও৷ সেই অনুষ্ঠানেই দলীয় কর্মীদের বিধানসভা নির্বাচনের কথা মনে করিয়ে দিয়ে সতর্ক করেন প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ৷
সৌগত রায় বলেন, ‘আমি অপর্ণার একটা কাজকে খুব সমর্থন করি৷ ও বরাহনগর উৎসবটা বন্ধ করে দিয়েছে৷ এটা খুব ভাল করেছে৷ তার মানে কি আমি গান-বাজনা পছন্দ করি না? হ্যাঁ খুবই করি৷ যদি একটা পার্টি খেলা আর মেলার মধ্যে চলে যায়, তাহলে তার রাজনৈতিক বোধটাই চলে যায়৷ ছ মাস পরেই নির্বাচন৷ জেতাটাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য৷ অন্য কিছু এখন করবেন না৷ অপর্ণা বরানগর উৎসব বন্ধ করেছে, ঠিক করেছে৷ ওসব নিয়েই না হলে সবাই ছ মাস মেতে থাকত৷ রাজনীতিটা ভুলে যেত৷ রাজনীতি ভুলে গেলে চলবে না৷’
advertisement
এখানেই না থেমে দলেরই একশ্রেণির নেতা, কর্মীদের মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সৌগত রায় বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, এটা অন্য কোনও দল নয়৷ এটা সংগ্রাম, শহিদদের দল৷ এই দল করার সময় আমার মনে পড়ে যায় ১৯৯৩ সালে ১৩টা ছেলে মারা গিয়েছিল৷ আমি নিজে হাতে মর্গ থেকে মৃতদেহগুলি বের করেছিলাম৷ নন্দীগ্রামে আমি ছিলাম না, কিন্তু সেখানেও ১৪ জন মারা গিয়েছিল৷ আমার সবসময় মনে হয়ে এঁরা প্রাণ দিয়ে গেলেও তো দেখল না যে দল ক্ষমতায় আছে৷ যাঁরা ক্ষমতায় থাকাকালীন দল করছে, তাঁরা কি মনে রাখছে যে এটা শহিদদের দল? না কি ভাবছে এই সুযোগে যা কামিয়ে নেওয়া যায় কামিয়ে নিই৷ এটাই মূল কথা৷ দলের পবিত্রতা বজায় রাখতে হবে৷’
সৌগত রায়ের এই মন্তব্যে সম্মতি জানাতে দেখা যায় বরানগর পুরসভার চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিককে৷ অনুষ্ঠানে উপস্থিত দলের নেতা, কর্মীরাও হাততালি দিয়ে সাংসদের কথায় সহমত পোষণ করেন৷ কিন্তু প্রবীণ সাংসদের এই মন্তব্য তৃণমূলের অন্দরেই বিতর্ক উস্কে দিয়েছে৷ এই মন্তব্য করে তৃণমূল নেতাদের খেলা, মেলা সহ বিভিন্ন উৎসবে জড়িয়ে থাকাকেই প্রবীণ সাংসদ কটাক্ষ করলেন কি না, বা রাজ্য সরকারের উদ্যোগে বছরভর বিভিন্ন ধরনের উৎসবের আয়োজন নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন কি না, সেই প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা৷