এখনএ পর্যন্ত বিজেপির অভ্যন্তরে সিদ্ধান্ত, আগামী ২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদিকে সামনে রেখে নির্বাচনী লড়াইয়ে যাবেদল। এর আগে ২০১৪ ও ২০১৯- এর লোকসভা নির্বাচনে মোদিকে সামনে রেখেই বিপুল সাফল্য পেয়েছে বিজেপি। কিন্তু, সাম্প্রতিক কয়েকটি উপনির্বাচন এবং বিধানসভা ভোটে ধাক্কা খেয়েছে বিজেপি। হিমাচল প্রদেশ এবং কর্নাটকে হারলেও, কর্ণাটকে বিজেপির হারার পাশাপাশি কংগ্রেসের উত্থান যথেষ্ট দুশ্চিন্তার মধ্যে রেখেছে বিজেপি এবং সংঘ পরিবারকে।
advertisement
আরও পড়ুন: কলকাতা পুলিশ থেকে সরানো হল হলেন দময়ন্তী সেনকে! রুটিন বদলি, দাবি সরকার সূত্রের
সম্প্রতি, কর্ণাটকের এই হারের কারণ পর্যালোচনা করতে গিয়ে আরএসএস এর মুখপত্র অর্গানাইজার-এর গত ২৩ মের সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছে, “এটাই বিজেপির বোধদয়ের জন্য সঠিক সময়। বিজেপিকে বুঝতে হবে, একমাত্র মোদির ভাবমূর্তি ও হিন্দুত্ববাদী প্রচার দিয়ে নির্বাচনে জেতা যাবে না। তার জন্য আঞ্চলিক স্তরের রাজনীতিতে দলীয় নেতৃত্বের কার্যকরী ও সফল ভূমিকা থাকা দরকার।”
যদিও, আরএসএস-এর ওই বিশ্লেষণে, কর্ণাটকের নির্বাচনে বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে দলীয় নেতৃত্বের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাব এবং কংগ্রেসের শিবকুমার ও সিদ্দারামাইয়ার মতো ওজনদার নেতার অভাব, লিঙ্গায়েত ভোটকে দলের অনুকূলে আনতে না পারার মতো একাধিক বিষয়কে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু, আরএসএস-এর মতে, কর্ণাটকের নির্বাচনে এসব প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্বেও, মোদিকে লড়তে হয়েছে মূলত কর্ণাটকে দলের দূর্নীতিগ্রস্ত ভাবমূর্তির বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: ভয়ঙ্কর রেল দুর্ঘটনার পরই ট্রেনের টিকিট বাতিলের হিড়িক? অভিযোগ উঠতেই মুখ খুলল আইআরসিটিসি
কর্ণাটকে বিশাল বর্ণাঢ্য মিছিল, নিজের ক্যারিশমার বিচ্ছুরন দিয়েও শেষ পর্যন্ত দলের দূর্নীতিগ্রস্ত ভাবমূর্তিকে ঢাকতে পারেননি মোদি। এখানেই অশনি সংকেত দেখছে সংঘ। আর, সে কারণেই দলীয় মুখপত্রের একেবারে সম্পাদকীয়তে সম্পাদক প্রফুল্ল কেতকারের কলমে বিজেপিকে সতর্ক করে বার্তা দিল আরএসএস। সম্পাদকীয়তে এ কথাও বলা হয়েছে কংগ্রেসের এই উত্থান এবং বিপুল জয় নিশ্চিত ভাবেই ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে কংগ্রেসকে বাড়তি অক্সিজেন জোগাবে।
প্রসঙ্গত গত ১৩ মে ২২৪ আসনের কর্ণাটক বিধানসভার নির্বাচনে ১৩৫টি আসনে জয় পেয়েছে কংগ্রেস। আর, ১০৪টি জেতা আসন থেকে কমে বিজেপি এখন মাত্র ৬৬। কংগ্রেস যেখানে ৬০ শতাংশ ভোট পেয়েছে, সেখানে, বিজেপির শতকরা ভোটের পরিমাণ মাত্র ৩৬ শতাংশ।
রাজনৈতিক মহলের মতে, কর্নাটক জয় বিজেপির কাছে শিবাজির দাক্ষিণাত্ব জয়ের মতোই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ, দক্ষিণের একমাত্র কর্ণাটকেই বিজেপির সরকার ছিল। ফলে, সেই রাজ্য ধরে রাখতে মোদি, শাহরা চেষ্টার কোনও কসুর করেননি। কিন্তু, তা সত্বেও মোদিকে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে কর্ণাটক থেকে। কর্ণাটকে হারের পরেই সংবাদমাধ্যমের একাংশে দেখা গিয়েছিল, মোদির জনমোহিনী ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা শুরু করতে। এবার, খোদ আরএসএস-এর মুখপাত্র অর্গানাইজার-এর সম্পাদকীয়তে এই ইঙ্গিত দেওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই সেদিন সংবাদমাধ্যমের একাংশের তোলা সেই প্রশ্নই যথার্থতা পেল বলে মনে করছে বিজেপির একাংশ।