নতুন বছরের গোড়ায় রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। নভেম্বরের শুরুতেই রাজ্য রাজনীতিতে এখনই তার আঁচ পাওয়া যাচ্ছে। বিগত লোকসভা ও বিধানসভা ভোটের আগে বাংলার মন পেতে বাঙালি মনীষীদের সম্মান জানানোর কৌশল নিয়েছিল বিজেপি। রবীন্দ্রনাথ, বিদ্যাসাগর, বিবেকানন্দের মতো মনীষীদের জন্মদিনে সামাজিক মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে রাজ্যের নেতাদের ট্যুইটের লাইন পড়ে যেত। কেন্দ্রের নির্দেশে কেন্দ্রীয় নেতা, মন্ত্রী থেকে রাজ্যের নেতাদের জেলায় জেলায় মনীষীদের বাসভবনে গিয়ে ঘটা করে সম্মান জ্ঞাপন করতে দেখা গেছিল।
advertisement
আরও পড়ুন: অনুব্রত নন, কোটি টাকার টিকিট কেটেছিলেন অন্য কেউ? লটারি রহস্যে নতুন মোড়
কিন্তু, ভোটের বাক্সে তার প্রভাব পড়েনি। সম্প্রতি, দিল্লির লাল কেল্লায় নেতাজি মিউজিয়াম ও ইন্ডিয়া গেটে নেতাজির মূর্তি বসানোর মধ্যে একদিকে বাংলা ও বাঙালির দেশপ্রেমকে গুরুত্ব দেওয়ার কৌশল রয়ছে বলে মনে করে রাজনৈতিক মহল। শহিদ মিনারে নেতাজিকে প্রণাম জানানোর সংঘের কর্মসূচিও সেই একই সূত্রে গাঁথা।
যদিও, সংঘের তরফে দক্ষ্মিণবঙ্গের প্রান্ত প্রচারক বিপ্লব রায় দাবি করেন, নেতাজি জয়ন্তী তাঁরা বরাবরই পালন করেন। এটা নতুন কিছু নয়। সংঘপ্রধান মোহন ভাগবত এবার কলকাতায় থাকার কারণেই তাঁরা নেতাজিকে নিয়ে বড় মাপের কর্মসূচি করছেন।
সংঘ যাই বলুক না কেন, এটা ঠিকই, নেতাজির জন্মদিনে কলকাতার শহিদ মিনারের মঞ্চ থেকে ভাগবত ও রাজ্যের হাজারো স্বয়ংসেবকের 'নেতাজি স্যালুট ' এই দৃশ্য রচনার মধ্যে অভিনবত্ব রয়ছে। রয়েছে রাজনৈতিক বার্তাও।
আরও পড়ুন: চোখ কেন ঢাকা? ভিড়ের মধ্যেও ছোট্ট মেয়েকে দেখেই এগিয়ে গেলেন অভিষেক, মিলল চিকিৎসার আশ্বাস
রাজনৈতিক মহলের মতে, দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বিজেপি, আরএসএস- এর ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক রয়ছে। সেই অস্বস্তি কাটাতে কখনও সাভারকার, কখনও নেহেরু, গান্ধির বিপরীতে পটেলকে আঁকড়ে ধরেছে বিজেপি। সেই সূত্রেই এবার নেতাজি।
শহিদ মিনারের মঞ্চে নেতাজির বিশাল কাট আউটের পাশে থাকবে আরএসএস- এর প্রতিষ্ঠাতা কেশব বলিরাম হেডগেওয়াড়ের ছবি। আরএসএস- র দাবি, আজাদ হিন্দ গঠনের সময় হেডগেওয়াড়ের সঙ্গে নাগপুর ও কলকাতায় দেখা করেছিলেন নেতাজি। পর্যবেক্ষকদের মতে, স্বাধীনতা সংগ্রামে সংঘের অবদান নেই বলে যে প্রচার তা যে সঠিক ইতিহাস নয়, সেটা প্রমাণ করতে, এই মরিয়া চেষ্টা সংঘের।
বাংলা ও বাঙালির শ্রেষ্ঠ আইকন নেতাজিকে নিয়ে আরএসএস- এর এই কর্মসূচি, বিজেপির ভোট বাক্সে কতটা সহায়ক হবে তা নিয়ে সংশয় থাকলেও, রাজ্য রাজনীতিতে যে নতুন বিতর্ক তৈরি করতে চলেছে তাতে কোন সংশয় নেই।