লকডাউন দেড় মাস অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। যদিও লকডাউনের তৃতীয় দফায় এসে সরকার বেশ কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দিয়েছে। কিন্তু প্রথম দু'দফায় প্রায় সবকিছুই বন্ধ ছিল। এই অবস্থায় সব থেকে বেশি বিপদে পড়েছে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষেরা। দীর্ঘদিন কাজ না থাকায় জমানো রসদও এখন ফুরিয়ে এসেছে।
ডায়মন্ড হারবারের বাসিন্দা খোকন সামন্ত বেহালার ব্যানার্জি পাড়া স্ট্যান্ডে রিক্সা চালাচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরে। লকডাউনের জেরে বন্ধ হয়ে যায় উপার্জন। প্রথম কয়েকদিন বাড়িতে থাকার পর উপায় না পেয়ে রিক্সা নিয়ে স্ট্যান্ডে আসেন। কিন্তু কোনও দিন একটা কোনও দিন দুটো আবার কোনও দিন ভাড়া না খেটে ফিরতে হয়েছে বাড়ি। খোকন সামন্ত বলেন, 'জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্ট্যান্ডে আসছিলাম। কিন্তু বাড়ি থেকে লোকজন বেরোচ্ছে না। তাই ভাড়া ও নেই। অনেকদিন এক টাকাও ভাড়া না খেটে বাড়ি ফিরেছি।' একই অবস্থা উত্তর ২৪ পরগনা থেকে বেহালায় রিকশা চালাতে আসা রামকৃষ্ণ ঘরামিরও।
advertisement
এই রকম অবস্থায় পরিস্থিতি আর সামলে উঠতে পারছিলেন না ব্যানার্জি পাড়ার রিক্সা স্ট্যান্ডের চালকেরা। বাধ্য হয়ে শেষ পর্যন্ত সবাই মিলে ঠিক করেন ইউনিয়নের তরফ থেকে সাহায্যের জন্য আবেদন করা হবে বিভিন্ন জায়গায়। বনমালী নস্কর রোড রিক্সা পুলার ইউনিয়নের পক্ষ থেকে লিখিত আবেদন করা হয় স্থানীয় একটি ক্লাবের কাছেও। সেখান থেকেই তাদের এই দুর্দশার কথা জানতে পেরে এগিয়ে আসেন স্থানীয় বাসিন্দা অর্ধেন্দু বিকাশ শীল। তিনি উদ্যোগী হয়ে রিকশাচালকদের চাল, ডাল, আলু, সয়াবিন, নুন, হলুদ সহ বার রকমের সামগ্রী ত্রিশ জন রিকশা চালককে দেন। অর্ধেন্দুবাবু বলেন, 'ওদের সকলকেই আমি দীর্ঘ দিন ধরে চিনি। আমার বাড়ির লোকেরা ওদের রিকশাতেই যায় আসে। লকডাউনে ওরা সমস্যায় পড়েছে শুনে এক সপ্তাহের মত ব্যবস্থা করা দিলাম।'
SOUJAN MONDAL