প্রসঙ্গত, প্রাথমিকে নিয়োগের দুর্নীতি শিকড় খুঁজতে গিয়ে শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অয়ন শীলের সল্টলেকের এফডি ব্লকের বাড়ি কাম অফিস এবং চুঁচুড়া বাড়ি থেকে পুরসভা নিয়োগ দুর্নীতি omr শিট উদ্ধার করে ইডি।
আরও পড়ুন: কংগ্রেসের ক্লিন স্যুইপ! কে হচ্ছেন কর্ণাটকের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী? জল্পনা তুঙ্গে
অয়নের প্রায় ১০ কোটি বেশি অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় চার্জেশিটে। ইডি সূত্রের খবর, পুরসভায় নিয়োগের জন্য বিভিন্ন প্রার্থীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা টাকা প্রভাবশালী ও নেতাদের কাছে পাঠাতেন অয়ন। পুরসভা কর্মীরাই এজেন্ট হয়ে অয়ন শীলকে লিস্ট পাঠাত বলে অভিযোগ। ইডি-র দাবি, বিপুল টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয়েছে পুরসভার পিওন, ক্লার্ক, ইঞ্জিনিয়র, মজদুর সহ বিভিন্ন পোস্টের চাকরি। অযোগ্যপ্রাথীরা বেআইনি ভাবে চাকরি পেয়েছে। এমনকি, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অয়ন শীলের সাংকেতিক কোড রহস্যের সন্ধানও পায় ইডি।
advertisement
ইডির দাবি, “এমএম “, “এসবি “, “সিএইচ “,” বিএইচ” কোড ল্যাঙ্গুয়েজ রয়েছে পুরসভা বেআইনিভাবে নিয়োগের লিস্টে! ইডি সূত্রের খবর, অয়ন শীল পুরসভায় বেআইনি নিয়োগের ক্ষেত্রে ক্যান্ডিডেট রেকমেন্ডেশন যে সব প্রভাবশালী করতেন তাঁদের নাম বা পদ অনুসারে “কোড” ল্যাঙ্গুয়েজে লিখে রাখা হতো লিস্টে। অয়ন শীলের কম্পিউটারের হার্ড-ডিস্ক থেকে উদ্ধার হয়েছে সেই লিস্ট। ইডি সূত্রের খবর, প্রায় আটটি কোড ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করা হয়েছে সেই লিস্টে। কোড ল্যাঙ্গুয়েজ গুলি হল -” MM”, “SB”, “CH” , “BH” । এর মধ্যে MM এর ক্যান্ডিডেট লিস্টে সবথেকে বেশি বলে দাবি ইডির।
ইডি সূত্রের খবর, কোডের পাশে লেখা থাকত সে কত জন চাকরি প্রার্থীর হয়ে টাকা পাঠিয়েছে, তাদের নামের রেকমেন্ডেশন, কত টাকা নেওয়া হয়েছে এবং কত টাকা বাকি রয়েছে৷ অয়নকে জেরা করে জানা গিয়েছে, ষাটটির বেশি পুরসভায় প্রায় ৬ হাজার জনের বেআইনি নিয়োগের মধ্যে ৮০-৯০%-ই হয়েছে রেকমেন্ডেশন লিস্ট অনুসারে। বাকি ১০ পার্সেন্ট অয়ন শীল নিজের কোটায় নিয়োগ করেছিলেন।
মজদুর, পিওন, ক্লার্ক, অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার সহ একাধিক পদে এই বেআইনি নিয়োগ হয়েছে। প্রতি পোস্টের জন্য আলাদা আলাদা রেট চার্ট ছিল। প্রভাবশালীদের সঙ্গেও চুক্তি বদ্ধ ছিলেন অয়ন। প্রভাবশালীদের রেকমেন্ডেশন অনুসারে পুরসভায় বেআইনি নিয়োগের ক্ষেত্রে কারও থেকে ৪ লক্ষ টাকা নেওয়া হত তো কারও ক্ষেত্রে ১০ লক্ষ৷ তার মধ্যে থেকে ১০ – ১৫ শতাংশ পেত অয়ন শীল। বাকি ৮৫-৯০ শতাংশই পেতেন প্রভাবশালীরা৷ ইডির জেরায় এমনটাই দাবি করেছেন অয়ন।
একদিকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি অন্যদিকে পুরসভা নিয়োগ দুর্নীতি, দুদিকে থেকে বেআইনি ভাবে কোটি কোটি টাকা এসেছে অয়ন শীলের কাছে। অয়নের ছেলে অভিষেক শীল, স্ত্রী কাকলি শীল, ছেলের বান্ধবী, অয়নের মা, বাবা এবং অয়নের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী শ্বেতা চক্রবর্তীও রয়েছেন ইডির নজরে। এঁদের নামে বহু সম্পত্তি ও ব্যাঙ্কের লেনদেন রয়েছে বলে দাবি ইডির।
ARPITA HAZRA