রাজীব এদিন ফেসবুকে লিখেছেন, "সমালোচনা তো অনেক হলো। মানুষের বিপুল জনসমর্থন নিয়ে আসা নির্বাচিত সরকারের সমালোচনা ও মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধিতা করতে গিয়ে কথায় কথায় দিল্লি আর ৩৫৬ ধারার জুজু দেখালে বাংলার মানুষ ভালো ভাবে নেবে না। আমাদের সকলের উচিত রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে কোভিড আর ইয়াস দুর্যোগে বিপর্যস্ত বাংলার মানুষের পাশে থাকা।
advertisement
স্পষ্টতই রাজীব দলের নীতি এবং অবস্থানের বিরোধিতা করছেন। দলের তরফে যখন ভ্যাকসিন বন্টন-সহ নানা অভিযোগ আনা হচ্ছে, বারংবার ভোট হিংসার কথা প্রচার করা হচ্ছে, কোনও রাখঢাক না রেখেই রাজীব এই বিপক্ষে দাঁড়াচ্ছেন। এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতাকেও যে তিনি ভালো চোখে দেখছেন না, সেই বার্তাও খোলাখুলি দিচ্ছেন রাজীব।মনে রাখতে হবে আজ রাজীব যখন এই মন্তব্য করছেন, শুভেন্দু অধিকারী তখন দিল্লিতে। ভোট-হিংসা নিয়ে অভিযোগের ফিরিস্তি তিনি তুলে দিচ্ছেন মোদি শাহের হাতে। অর্থাৎ রাজীবের অবস্থান শুভেন্দুরও উল্টোমেরুতে। রাষ্ট্রপতির শাসন জারি করার যে ধুয়ো তুলছে তাঁর দল, রাজীব তারও নিন্দাই করছেন। দলীয় অবস্থান সমালোচনার জন্য রাজeব যে দিনটি বেছে নিয়েছেন তা উল্লেখযোগ্য কেননা আজ বিজেপি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য কমিটি তৈরি করেছে। যখনতখন দলবিরোধী মন্তব্যের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতেই তৈরি এই কমিটি।
করোনার দ্বিতীয় ধাক্কার পর আজই প্রথম বিজেপির বৈঠক ছিল হেস্টিংসের। সেই বৈঠকে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়. মুকুল রায় আসেননি। অবশ্য রাজীব বেশ কয়েকদিন ধরেই দলের কোনও কর্মসূচিতেই অংশগ্রহণ করছেন না। তার উপর আবার এই পোস্ট. রাজীব কি তবে আত্মসমালোচনা করছেন, রাজীব কি প্রকারন্তরে তৃণমূলেই ফিরতে চাইছেন, প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে তাঁর পোস্টই।
বিধানসভা ভোটের আগে গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে তৃণমূল নেত্রীর স্নেহস্পদ রাজীবও তৃণমূল ছেড়েছিলেন। কিন্তু পার্থক্য ছিল বাকিদের সঙ্গে, সরাসরি তিনি কু কথা বলেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে নিয়ে। বরং বিধানসভা ছেড়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর ছবি হাতে, চোখের জলে ভাসতে ভাসতে। নরম মনের রাজীব এ কথাও বলেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তিনি চিরকাল শ্রদ্ধা করবেন। ভোট বিপর্যয়ের পর কি এখন তিনি আসলে নিজেকেই নিজের কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন, উত্তর আসবে হয়তো অচিরেই।