কিছুদিন আগেই সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল শহর কলকাতায় এক বেহালা বাদকের ভিডিও। আনমনা হয়ে ভদ্রলোক একের পর এক সুর তুলে যাচ্ছেন। কিন্তু তিনি কে, খোঁজ শুরু করে গোটা শহর। খবর নিয়ে দেখা যায় ব্যক্তির নাম ভগবান মালি। নাতনি হয়েছে খবর পেয়েই মালদহ থেকে কলকাতায় আসেন ভগবানবাবু৷ সস্ত্রীক কলকাতায় মেয়ের কাছে এসে আটকে পড়েন বিধিনিষেধের জেরে। মেয়ে-জামাইয়ের একটাই মাথা গোঁজার আশ্রয়। লকডাউনের জেরে রোজগার বন্ধ জামাইয়ের৷ ছোট্ট ফুটফুটে নাতনি আর মেয়ে-জামাইয়ের বেহাল দশা চিন্তায় ফেলে দেয় ভগবানবাবুকে৷
advertisement
তাই বেহালা নিয়ে রাজপথে বেরিয়ে পড়েন তিনি। এই ভগবান বাবুর বেহালা বাজানোর ভিডিও ভাইরাল ফেসবুক-ট্যুইটারে। এটা নজরে আসতেই ভগবান বাবুর সাথে দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন রাজ চক্রবর্তী।
তার পরেই গিরিশ পার্কের কাছে তিনি চলে যান। শুধু কথা বলেই ক্ষান্ত হওয়া নয়, বিধায়ক রাজ চক্রবর্তী দেখা করেন স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী শশী পাঁজার সাথে, কথা বলেন যাতে ভগবান বাবুর পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়।
রাজ জানিয়েছেন, "একটি মানুষ বিপদে পড়েছেন তার পাশে এসে দাঁড়ানো আমাদের সকলের কর্তব্য। এত মিষ্টি বেহালা বাজান উনি। তেমনি ভালো মানুষ।" রাজ চক্রবর্তী কথা বলার পরেই ভগবান বাবুর আশ্রয়ের ব্যবস্থা হয়েছে। ওই এলাকায় কোনও বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। রাজ চক্রবর্তীর মতো মানুষ এসে দেখা করায় খুশি ভগবানবাবুর পরিবার।
মাথায় কাঁচা পাকা চুল, মুখে সাদা দাড়ি। কানে শুনছেন কম। শুধু নাতনির মুখের দিকে চেয়ে বেহালা বাজানোয় মগ্ন ভগবানবাবু। উত্তর কলকাতার এক বিস্তীর্ণ অংশ জুড়ে ঘুরে ঘুরে বা ফুটপাতে বসে বেহালা বাজিয়ে চলেন তিনি। দিনের শেষে যা উপার্জন হয় তা দিয়েই টুকটাক খাবার কিনে বাড়ি ফেরেন। তাঁর পরিবার খুশি, রাজ চক্রবর্তী এসে দেখা করায় তাদের মাথা গোঁজার একটা ঠাঁই হয়েছে। রাজকে নিরাশ করেননি মালদহের ভগবান মালি। বলেছেন, যে সুর তুমি আমায় দাও, আমি বাজিয়ে দেব।