নয়া রেলপ্রকল্পগুলি থেকে হাত তুলে নিতে চেয়ে রাজ্যকে চিঠি দিল রেল মন্ত্রক। মুখ্য সচিব সহ রাজ্যের তিন সচিবকে চিঠি পাঠালেন রেলওয়ে বোর্ডের ওয়ার্কস প্ল্যানিং ডিরেক্টর। চিঠিতে জানানো হয়েছে সাবার্বার্ণ সিস্টেমে কোনও প্রকল্পের ক্ষেত্রে ফিসিবিলিট স্টাডি থেকে যান্ত্রিক সরঞ্জাম সব খরচই বহন করতে হবে রাজ্যকে। উচ্ছেদ সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান ও পুনর্বাসনের দায়িত্বও এবার থেকে রাজ্যের। রেল কোনও দায় নেবে না । রেলের চিঠিতে ক্ষুব্ধ রাজ্য।
advertisement
বছর বছর বাড়ছে ক্ষতির বহর। তাই এবার শহর ও শহরতলির নতুন রেল প্রকল্পগুলি থেকে হাত তুলে নিতে চাইছে রেল মন্ত্রক। এ কথা জানিয়ে রাজ্যের মুখ্য সচিব, পরিবহণ সচিব ও নগরায়ন সচিবকে চিঠি পাঠাল রেল।
এই চিঠির পরে রাজ্যের সমস্ত রেল প্রকল্পগুলি মুখ থুবড়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হল ৷ বিশেষ করে এই মুহূর্তে কলকাতায় চলছে মেট্রোরেল সম্প্রসারণের কাজ ৷ এমতাবস্থায় রেলমন্ত্রক হাত গুটিয়ে নিলে ফের আটকে যাবে অর্ধসমাপ্ত ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ ৷ প্রস্তাবিত গড়িয়া-বিমানবন্দর রুটের কাজও আটকে পড়বে ৷ একইসঙ্গে পূর্বরেল ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের প্রকল্পের ভবিষ্যতও হয়ে পড়ল অনিশ্চিত ৷
রেল মন্ত্রক সূত্রের খবর,
----২০১০ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত ভারতে মেট্রোরেল-সহ বেশ কিছু রেল ডিভিশনে ক্ষতির অঙ্ক গিয়ে দাঁড়িয়েছে পনের হাজার কোটি টাকায়
--- ক্ষতির বহর চিন্তা বাড়িয়েছে রেলমন্ত্রীর
----খরচের কথা চিন্তা করেই আগামী বছর থেকে রেল বাজেটকে সাধারণ বাজেটের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে
-- খরচ কমিয়ে আয় বাড়াতে স্টেশন ভাড়া দেওয়া হয়েছে
----চালকের পোষাকও স্পনসরশিপের উপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে
---পাশাপাশি এবার সাবার্বার্ণ সিস্টেম থেকেও হাত গুটিয়ে নিতে চাইছে রেল
খরচ আর ভর্তুকির চাপ সামলাতে নাজেহাল ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষ ৷ এর উপর রেলের উন্নয়নে কোনও সহায়তা ফাণ্ড গড়তে নারাজ কেন্দ্র ৷ রেল সূত্রে খবর, বিগত কয়েক বছরে শুধু বাংলার রেল প্রকল্পের পিছনেই খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা ৷ একদিকে যাত্রী ভাড়া বাড়িয়ে সমাধান খুঁজছে রেল তো অন্যদিকে, ব্যয় কমাতে প্রকল্পের খরচ রাজ্যের উপর ছাড়তে চাইছে রেলমন্ত্রক ৷ যদিও এর আগেও রেলের এহেন প্রস্তাব রাজি হয়নি রাজ্য ৷ তবে কেন্দ্র রাজ্যের টানাপোড়বে সব শেষে রাজ্যের প্রকল্পগুলিরই ভবিষ্যৎ হয়ে পড়ল অনিশ্চিত ৷
রেলের পরামর্শ, নতুন সাবার্বার্ণ প্রকল্পে রাজ্য তার আরবান ট্রান্সপোর্ট ফান্ড ব্যবহার ব্যবহার করুক ৷ খরচ হওয়া টাকা তোলার জন্য লেভি, বেটারমেন্ট ট্যাক্স, ডেভেলপমেন্ট ফি আদায় করুক রাজ্য ৷
এতে রাজ্যের বক্তব্য, এতে সাধারণ মানুষের ঘাড়ে অতিরিক্ত আর্থিক বোঝা চাপানো হবে। রাজ্যের বেশ কিছু মেট্রো প্রকল্পের কাজ আটকে। কিছু জায়গায় কাজ চলছে ঢিমেতালে। উচ্ছেদ সমস্যায় জর্জরিত আসানসোল, মালদহ, বারুইপুর , বারাকপুর সহ বেশ কয়েকটি স্টেশন। এই অবস্থায় রেলের চিঠিতে সংশয় দেখা দিয়েছে প্রকল্পগুলির ভবিষ্যত নিয়েই। আগামী বাজেটে আদৌ নতুন প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দ হবে কিনা তা নিয়েও এখন জোর জল্পনা প্রশাসনের অন্দরে।