আনলক পর্বের শুরু থেকেই শহরের বিভিন্ন জায়গায় যানবাহন পেতে গিয়ে চরম হয়রানির মধ্যে পড়তে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। যদিও শুরুর কয়েক দিনের মধ্যে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছিল। পরিবহণ দপ্তর কলকাতার বুকে সরকারি বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি করায় এবং একই সঙ্গে বেসরকারি বাসের সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকায় মানুষের ভোগান্তি অনেকটাই কমেছিল।
advertisement
কিন্তু বাস মালিক সংগঠনগুলির ভাড়া বৃদ্ধির অবস্থানে অনড় থাকে এবং সরকারের প্রস্তাবে রাজি না হয়ে সোমবার থেকে বাস না চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে সপ্তাহের প্রথম কাজের দিন বাড়ি থেকে বেরিয়ে চরম দুর্ভোগের মুখোমুখি পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। এ দিন সকালবেলা থেকেই উল্টোডাঙ্গা মোড়ে মানুষের দুর্ভোগের ছবি ধরা পড়ে। উল্টোডাঙ্গাতে যে সরকারি বাস গুলি বারাসত বা এয়ারপোর্টের দিক থেকে আসছিল, সেগুলিতে সব সিটে যাত্রী থাকায় অনেক বাসই দাঁড়ায়নি।
যদি কোনও বাসে দু' এক জন যাত্রী উল্টোডাঙায় নামছিলেন, তার বদলে অন্তত দশ জন যাত্রী বাসে ওঠার চেষ্টা করতে থাকেন। হাতেগোনা কিছু বেসরকারি বাস এদিন দেখা যায় উল্টোডাঙ্গায়। সেগুলির বেশিরভাগই শহরতলির বিভিন্ন জায়গা থেকে কলকাতায় আসছিল। কিন্তু ওই বাসগুলিতে করোনা ভাইরাস মোকাবিলার যে সতর্কতা সরকার মেনে চলতে বারবার বলছে, তার কিছুই প্রায় মানা হচ্ছিল না। প্রায় সব বাসেই মানুষ দাঁড়িয়ে ছিলেন। বেশ কিছু বাসে এতটাই ভিড় যে ঝুঁকি নিয়ে বাদুড়ঝোলা হয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যেতে দেখা যায় অনেক যাত্রীকে।
একই অবস্থা শ্যামবাজার পাঁচ মাথা মোড়েও। সেখানেও বহু মানুষ দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে তারপর বাসে উঠতে পেরেছেন। ডানলপের বাসিন্দা অন্তরা হালদার বলেন, 'ভবানীপুর যাব বলে বেরিয়েছি। প্রায় এক ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে বাস পেয়ে শ্যামবাজার এসে পৌঁছেছি। এখানে অনেকক্ষণ হয়ে গেল। জানিনা কতক্ষণে পৌঁছতে পারব।' উল্টোডাঙ্গা মোড়ে দেবজিৎ মাঝি বলেন, 'আধঘণ্টার উপর দাঁড়িয়ে রয়েছি। যে সরকারি বাসগুলি ফাঁকা আছে সেগুলি দাঁড়াচ্ছে না, আর বাকিগুলিতে এত ভিড় যে ওঠা যাচ্ছে না। করোনার মধ্যে এরকম ভাবে বাসে উঠব কী করে?'
SOUJAN MONDAL