এদিন সকালে প্রেসের পরিচয় নিশ্চিত করতে কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে বিজেপির লালবাজার অভিযানের খবর করতে যাওয়া সাংবাদিক ও চিত্রসাংবাদিকদের ফ্লুরোসেন্ট সবুজ জ্যাকেট দেওয়া হয় ৷ কিন্তু হঠাৎ সংবাদ মাধ্যমকে এমন লাইফ জ্যাকেট পড়ানোর উদ্যোগ নিল পুলিশ? উত্তর জানতে পিছিয়ে যেতে হবে তিনদিন ৷
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার ৷ বামফ্রণ্টের নবান্ন অভিযানে বাম কর্মী সমর্থক ছাড়াও সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের উপরও বেধড়ক লাঠি চার্জ করে কলকাতা পুলিশ ৷ আহত হন ৩০-৩২ জন সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধি ৷
advertisement
অ্যাডিশনাল সিপি বিনীত গোয়েলের সামনেই সাংবাদিকদের ওপর পুলিশের বেধড়ক লাঠিচার্জের অভিযোগ ওঠে। অভিযুক্ত আইপিএস অপরাজিতা রাই, মুরলীধর সহ একাধিক পুলিশ অফিসার। সাংবাদিকদের ওপর আক্রমণের নিন্দায় সরব হন সকলে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিন্দার ঝড় ওঠে।
পুলিশি অত্যাচারের প্রতিবাদ জানাতে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের উদ্যোগে রবীন্দ্র সদন থেকে লালবাজার পর্যন্ত মিছিলের আয়োজন করা হয়। মিছিলে সামিল কলকাতার আপামর সাংবাদিককূল'গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভের ওপর আক্রমণ। এ কেমন ধরনের গণতন্ত্র'। 'WE WANT JUSTICE' লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে মিছিলে হাঁটেন সাংবাদিকরা।
কেন এই লাঠিচার্জ? সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের তরফে পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের কাছে নির্দিষ্টভাবে জানতে চাওয়া হয়। ব্যাখায় তিনি জানান, অশান্ত পরিস্থিতিতে সংবাদ মাধ্যমকে আলাদা করে চিনতে পারেনি পুলিশ ৷ তখনই কমিশনার এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে সংবাদ মাধ্যমকে বিশেষ জ্যাকেট পরানোর পরামর্শ দেন ৷
যেমন পরামর্শ, তেমন অ্যাকশন ৷ এদিন বিজেপির লালবাজার অভিযানে কলকাতা পুলিশের দেওয়া এই ফ্লুরোসেন্ট সবুজ জ্যাকেটই প্রাণ থুড়ি পিঠ বাঁচাল সংবাদ মাধ্যমের ৷
উল্লেখ্য, গতকাল বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়ও সংবাদমাধ্যমের উপর পুলিশি জুলুমের সমালোচনা করে প্রশাসনকে কটাক্ষ করে সাংবাদিকদের ‘বর্ম’ পরে লালবাজার অভিযানে আসার পরামর্শ দিয়েছিলেন ৷
তবে কলকাতায় প্রেসের এই বিশেষ জ্যাকেট কোনও নজিরবিহীন ঘটনা নয় ৷ বিদেশে যুদ্ধক্ষেত্রে বা কোনও অশান্ত পরিস্থিতিতে খবর সংগ্রহ করতে গেলে সংবাদমাধ্যম প্রতিনিধিকে প্রেস লেখা ফ্লুরোসেন্ট কমলা রঙয়ের একটি জ্যাকেট পড়তে হয় ৷ যাতে শত্রু বা সেনা সংবাদমাধ্যম প্রতিনিধি বলে বুঝতে পেরে তাদের উপর হামলা না চালান ৷ তবে অনেকেই এই ব্যবস্থায় প্রশ্ন তুলেছেন, কলকাতা কি তবে যুদ্ধক্ষেত্র?