আদালতের নির্দেশ মেনেই বিসর্জন শেষ করতে প্রস্তুতি নিচ্ছে রাজ্য প্রশাসন। তারই মধ্যে বিসর্জন ঘিরে শুরু হয়ে গেল পুরোদস্তুর রাজনীতি। হাইকোর্টের রায়কে হাতিয়ার করে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ বিজেপির।
মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে এদিন দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘রাজনীতির জন্য শুধু উনি এই কাজ করছেন ৷ একটা সম্প্রদায়ের জন্য তিনি নিজেই লড়ছেন ৷ হাইকোর্টে চড় খেতে খেতে গাল লাল হয়ে যাচ্ছে ৷ তবু বলছেন সুপ্রিম কোর্টে যাব ৷’
advertisement
একইসঙ্গে বিজেপি রাজ্য সভাপতির অভিযোগ- ‘উনি দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে গন্ডগোল পাকাতে চাইছেন ৷ কেন ওঁর মনে হচ্ছে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হবে ৷ এই ধরনের রাজনীতি বন্ধ হওয়া দরকার ৷ কোন ধর্মের রীতি-নীতি কীভাবে পালন হবে ৷ তা নিয়ে আমাদের বলার কোনও অধিকার নেই ৷ তবু তিনি বারবার সেই চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন ৷’ এছাড়া বিসর্জন মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়ে দিলীপ ঘোষ আদালতকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ৷
রাজ্যে অশান্তি তৈরি করতেই বিসর্জন নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল বলেও অভিযোগ গেরুয়া শিবিরের।
বিসর্জন বিতর্কে চুপ থাকেনি কংগ্রেসও ৷‘ দিদি', দেবীর বিসর্জন নিয়ে অকারণে বিতর্ক তৈরী করলেন। দেবীর আবাহনের আগেই বিসর্জন করে দিলেন আপনি! একটা প্রশাসন কতটা ব্যর্থ হতে পারে আদালত তা বুঝিয়ে দিল।’ বিসর্জন মামলায় হাইকোর্টের রায়ের পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে কংগ্রেস রাজ্য সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর মন্তব্য ৷
বিজেপির নাম মুখে না আনলেও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীও। তিনি বলেন, ‘কে, কী পুজো করবে, তা মানুষের অধিকার ৷ সবার উপরে মানবধর্ম, আমি তাতেই বিশ্বাসী ৷ আমি সর্বধর্ম সমন্বয়ে বিশ্বাস করি ৷ আমার কাছে মা-আম্মার কোনও পার্থক্য নেই ৷ ওদের জন্য আমার করুণা হয় ৷
রাজনৈতিক চাপানউতোরের মাঝেই আদালতের নির্দেশ মানতে নতুন করে সক্রিয় প্রশাসন। মহরমের দিন বিসর্জনের জন্য আলাদা রুট করা ছাড়াও নিরাপত্তাও ঢেলে সাজানো হচ্ছে। রাজ্য প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে,
আদালতের নির্দেশ কোনও সমস্যা নয়। বিসর্জন নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না। সমন্বয় বৈঠকে বিস্তারিত কথা হয়েছিল। ফলে আদালতের নির্দেশ মানতে অসুবিধা হবে না। রাজ্য প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।
বিসর্জন বিতর্ককে পিছনে ফেলে সুষ্ঠুভাবে উৎসব শেষ করাটাই এখন রাজ্য প্রশাসনের চ্যালেঞ্জ।