সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী তাঁদের বক্তব্যে আধুনিক যুদ্ধের পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে তিন বাহিনীর সমন্বয়ের প্রয়োজনীয়তা জোর দিয়ে উল্লেখ করেন। বারবার উঠে আসে থিয়েটার কমান্ড গঠনের প্রসঙ্গ। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক অভিযানে দেখা গিয়েছে দ্রুত সিদ্ধান্ত ও সমন্বিত শক্তি প্রয়োগের কার্যকারিতা, যা থিয়েটার কমান্ড বাস্তবায়নের পক্ষে বড় যুক্তি হয়ে উঠছে।
advertisement
অপারেশন সিঁদুরের অভিজ্ঞতা:
গত মে মাসে সংঘটিত অপারেশন সিঁদুরে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর যৌথ পদক্ষেপ নজিরবিহীন সাফল্য এনে দেয়। সীমান্তবর্তী অঞ্চলে পরিচালিত এই অভিযানে দ্রুত সমন্বয়, গোয়েন্দা তথ্যের ভাগাভাগি এবং তিন বাহিনীর যৌথ তৎপরতা প্রশংসিত হয় আন্তর্জাতিক মহলেও। প্রতিরক্ষা মহল মনে করছে, এই অভিজ্ঞতাই থিয়েটার কমান্ড বাস্তবায়নের তাগিদ বাড়িয়ে দিয়েছে।
থিয়েটার কমান্ড কী ?
থিয়েটার কমান্ড হল একটি সমন্বিত কাঠামো, যেখানে নির্দিষ্ট ভৌগোলিক বা কার্যকরী এলাকার জন্য সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীকে একত্রে নিয়ে আসা হয়। সেই অঞ্চলের দায়িত্বে থাকবেন একজন থিয়েটার কমান্ডার, যিনি সরাসরি তিন বাহিনীর ইউনিটকে নির্দেশ দেবেন। এর ফলে আলাদা বাহিনী প্রধানদের নির্দেশের জন্য অপেক্ষা না করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে।
ভারতের প্রস্তুতি ও পদক্ষেপ:
ভারতে ২০২০ সালে চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ (CDS) পদ সৃষ্টির পর থেকেই থিয়েটার কমান্ডের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা চলছে। ২০২৩ সালে Inter-Services Organizations Act পাশের মাধ্যমে আইনি কাঠামো আরও মজবুত হয়েছে। কতগুলো থিয়েটার তৈরি হবে, তাদের সদর দফতর কোথায় হবে এবং কোন বাহিনী নেতৃত্ব দেবে—এসব নিয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সম্মেলনের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, সরকার দ্রুত বাস্তবায়নের দিকে এগোচ্ছে।
সম্ভাব্য সুফল:
থিয়েটার কমান্ড চালু হলে সীমান্ত ও সমুদ্রভিত্তিক হুমকির মোকাবিলা দ্রুত করা যাবে। রিসোর্সের অপচয় কমে যাবে এবং একইসঙ্গে আকাশ, স্থল, সমুদ্র, সাইবার ও মহাকাশ—সবক্ষেত্রে সমন্বিত প্রতিক্রিয়া জানানো সহজ হবে। প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারতের প্রতিরক্ষা কৌশলে এটি এক বড় মাইলফলক হতে পারে।
সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের বক্তব্য স্পষ্ট, সমস্ত চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও ভারত থিয়েটার কমান্ডের পথে দৃঢ়ভাবে এগোচ্ছে। অপারেশন সিঁদুরে পাওয়া অভিজ্ঞতা সেই পথ চলায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে, মত প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের ৷