পঞ্চায়েত দফতরের পক্ষ থেকে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে ৷ সেখানে বলা হয়েছে এই নজরদারি কমিটি মূলত প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনার বিভিন্ন প্রক্রিয়ার ওপর নজর করবেন, যাতে এই প্রক্রিয়া দ্রুত কার্যকরী হয়। এর পাশাপাশি উপভোক্তাদের তরফে যাতে কোনও সমস্যা না হয় এবং প্রত্যেকটি পর্যায়ে যাতে নিখুঁতভাবে কাজ করা যায় তার জন্যই এই রাজ্য পর্যায়ে টাস্ক ফোর্স গঠন করা হল। এক্ষেত্রে বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা করা, জব কার্ড ম্যাপিং, গ্রাম সভার বৈঠক আয়োজন করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করবে এই টাস্ক ফোর্স।
advertisement
আরও পড়ুন- কনভয়ের গাড়ির ধাক্কায় আহত বৃদ্ধা, হাসপাতালে নিয়ে গেলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী
ইতিমধ্যেই প্রত্যেকটি জেলার জন্য একজন করে আইএস ও ডব্লিউবিসিএস পর্যায়ে অফিসারকে নিয়োগ করেছে রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতর। গ্রামীণ আবাস যোজনা নিয়ে যাতে কোনওরকম অভিযোগ না ওঠে বা নিখুঁতভাবে কাজ করা যায়, প্রত্যেকটি জেলায় তার জন্য এই অফিসারদের নিয়োগ করেছে রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতর। আর এবার এই টাস্ক ফোর্সের গঠনকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনা নিয়ে জেলাগুলির ভূমিকার ওপর বৃহস্পতিবার কার্যত উস্মা প্রকাশ করে রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতর। অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা করা হলেও তা কেন সব জেলায় সঠিকভাবে কার্যকরী হচ্ছে না তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় উপভোক্তাদের নামে যাচাইয়ের কাজ নিয়ে বিডিও ও এসডিও অফিসে উপভোক্তাদের অভিযোগ জানানোর জন্য নির্দেশিকা দেওয়ার পরও তা যথাযথ হচ্ছে না।
রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামান্নোয়ন দফতরের অতিরিক্ত সচিব জেলাশাসকদের চিঠি দিয়ে এব্যাপারে সতর্ক করলেন। এই চিঠিতে পরিষ্কার বলা হয়েছে, উপভোক্তাদের তথ্য যাচাইয়ের সমীক্ষা পুরোদমে চললেও অভিযোগ জানানোর যথেষ্ট পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়নি। নির্দেশিকা মেনে প্রতিটি বিডিও, এসডিও ও জেলাশাসকের অফিসে বাধ্যতামূলকভাবে অভিযোগ জানানোর জন্য কমপ্লেন বক্স রাখতেই হবে। এমন জায়গায় রাখতে হবে যাতে সবাই এক মুহূর্তে তা দেখতে পায়। উপভোক্তারা তাদের অভিযোগ সরাসরি এই বক্সে জমা দিতে পারে। শুধু অভিযোগ জানানোর জন্য বক্সই নয়, এসডিও অফিসে কন্ট্রল রুম খুলতেই হবে। এই কন্ট্রোলরুমের ফোন নম্বর এলাকার মানুষের কাছে উপযুক্ত প্রচার করতে হবে। যাতে তারা অভিযোগ থাকলে সরাসরি কন্ট্রোলরুমে যোগযোগ করতে পারেন। অভিযোগ পাওয়া মাত্রই তদন্ত করে তা কতটা সত্য দেখতে হবে। এ ব্যাপারে সামান্য গড়িমসি করা যাবে না।
আরও পড়ুন- কোট গায়ে চাপালেই ম্যাজিক, রাতারাতি না কি অদৃশ্য হওয়া যাবে! বানিয়ে তাক লাগাল চিনা ছাত্ররা
চিঠিতে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামান্নোয়ন দফতরের অতিরিক্ত সচিব লিখেছেন, অভিযোগ জানানোর ব্যাপারে যে পরিকাঠামো তৈরি করতে সরকারি নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল তা যথাযথ অনুসরণ করা হচ্ছে না। কন্ট্রোলরুমে অন্তত ১৫-২০ জন কর্মী রাখতে হবে। এক্ষেত্রে সিভিল ডিফেন্স ভলেন্টিয়ার্স নিয়োগ করা যেতে পারে। যারা কন্ট্রোল রুমে থাকবেন তারা ফোনে প্রতিটি অভিযোগ পাওয়া মাত্রই অভিযোগকারীকে সবধরণের সহযোগিতা করবেন। বিশেষ করে জানিয়ে দেওয়া হবে, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্যতার মাপকাটি কী। এই কন্ট্রোলরুমের দায়িত্ব একজন সিনিয়ার অফিসারকে দিতে হবে। যিনি কমপ্লেন বক্স ও কন্ট্রোলরুমের কাজ দেখবেন। এসডিও মনে করলে যে কোনও অভিযোগের তৎক্ষনাৎ ব্যবস্থা নিতে পারেন। কত অভিযোগ আসছে তার প্রতিদিনের একটা রিপোর্ট দিতে হবে।
প্রসঙ্গত বুধবারই মুখ্য সচিব প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনা নিয়ে জেলাশাসকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। বৈঠকে তিনি নির্দেশ দেন গ্রামীণ আবাস যোজনায় সমীক্ষা করতে গিয়ে যদি কেউ বাধা পান তাহলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে চরম পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষত কয়েকটি জেলায় প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনার অধীনে সমীক্ষা করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ছেন আশা কর্মীরা। বুধবারের বৈঠকে কার্যত তো স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্য সচিব। প্রয়োজনে পুলিশের সহযোগিতা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। প্রশাসনিক মহল মনে করছে এক্ষেত্রে এই নির্দেশের মাধ্যমে বুধবারই স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে কোনওরকম রাজনৈতিক চাপ এক্ষেত্রে কাজ করবে না। বুধবারের মুখ্য সচিবের ভার্চুয়াল বৈঠকের পর বৃহস্পতিবার রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরের তরফে জেলাগুলিকে এই নির্দেশিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।