আজকাল সকাল সকাল খবরের কাগজের পাতা খুলতেই চোখে পড়ছে একরাশ রঙিন ছবি। গতরাতের ম্যাচের বাসি খবর, তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করছে বাঙালি। ফুটবল বিশ্বকাপ জ্বরে কাঁপছে গোটা কলকাতা।
আরও পড়ুন: ‘আমি আগেই বলেছিলাম ৩০ হাজার বেআইনিভাবে নিয়োগ হয়েছে’: শুভেন্দু অধিকারী
কিন্তু এবছর বাঙালির এই ফুটবল উন্মাদনা পৌঁছে গেল অন্য এক পর্যায়ে। প্রিয় ফুটবল তারকার নামেই নাম রাখা হল সদ্যোজাত শিশুর।
advertisement
নীল-সাদা ১০ নম্বর জার্সি পরা ওই লোকটার নাম অনেক ফুটবলপ্রেমীর কাছেই ঈশ্বরের নামান্তর। সেই মেসির নামেই এবার নিজের ছেলের নাম রাখলেন আর্মহার্স্ট স্ট্রিটের এক দম্পতি। সম্প্রতি লেডি ডাফরিন হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. রাজেশ বিশ্বাসের হাত ধরে পৃথিবীতে আবির্ভূত হল ‘মেসি’।
আরও পড়ুন: জি২০ বৈঠকের প্রস্তুতি পর্ব, সবার সাহায্য চাইলেন মোদি, ‘সাহায্য করব’, বললেন মমতা
হাসপাতাল সূত্রে খবর, এই মেসি-র মায়ের নাম সোনি গুপ্ত। তিনি উত্তর কলকাতার আর্মহাস্ট স্ট্রিট এলাকার বাসিন্দা। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে ন’মাস কুড়ি দিনের মাথায় তৃতীয় সন্তানের জন্ম দেন সোনি। তাঁর সিজারিয়ান সার্জারি করেছেন ডা. রাজেশ বিশ্বাস। সহকারী হিসেবে ছিলেন ডা. সুশাং লামা।
চিকিৎসক জানিয়েছেন, নতুন মেসি-র মা-বাবা দু’জনেই ফুটবল পাগল। কিন্তু বাচ্চা ডেলিভারির সময়ে ঘটছিল সব অদ্ভূত কাণ্ড। চিকিৎসকের বক্তব্য, ডেলিভারির সময়ে প্রায় কুড়িবার 'কিক' মারে বাচ্চাটি। বিষয়টি তাঁর বাবাকেও জানানো হয়। তারপরেই এই মেসির নামে নামকরণ।
সোনির স্বামী বলেন, "আমি নিজে আর্জেন্টিনার পাগল ভক্ত। আমার ছেলে মেসি না হয়ে যায় না।" সব শুনে মুচকি হেসেছেন ইমার্জেন্সি সার্জন ডা. রাজেশ বিশ্বাস। জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচার কঠিন ছিল। মায়ের হিমোগ্লোবিন ৭.৮ থাকায় ইলেক্ট্রোকটারি ব্যবহার করতে হয়েছে। তবে জন্মের পরে সম্পূর্ণ সুস্থ মেসি।
এখানেই শেষ নয়, সম্প্রতি কলকাতার মেডিক্যাল কলেজে জন্ম নিয়েছে আর্জেন্টিনার অন্য আরেক খেলোয়াড়।। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের স্ত্রীরোগ বিভাগের শল্য চিকিৎসক ডা. প্রিয়াঙ্কা স্যানাল জানিয়েছেন, ফুটবলারদের নামে নাম রাখার হিড়িক পড়েছে সেখানেও। মা-বাবারা সদ্যোজাতর নাম রাখছেন ফুটবলারদের নামে। সেখানে, মেসি কিংবা মারাদোনার নামই প্রাধান্য পাচ্ছে মূলত। অতএব বলাই যায়, এই ময়দানে দাঁড়িয়েও কিন্তু বাজিমাত করে দিচ্ছে আর্জেন্টিনা।
তবে শুধু এ ক্ষেত্রে নয়, চিকিৎসকদের কথা অনুযায়ী, বাবা-মায়েদের মধ্যে বিশেষ বিশেষ দিনে ডেলিভারির করানোর হিড়িক প্রায়শই দেখা যায়। এমনকি, সেই দিনের সঙ্গে মিলিয়ে নামও রাখা হয় সদ্যোজাতর। তবে বিশ্বকাপকে ঘিরে এই নাম রাখার হিড়িক সত্যিই অন্যরকম।