TRENDING:

বাঙালিকে শরবতে মজিয়ে রেখেছে শতাব্দীপ্রাচীন প্যারামাউন্ট

Last Updated:
impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
#কলকাতা:  ঐতিহ্য এবং ইতিহাসের দিক থেকে বিচার করলে কলকাতা শহরের গুরুত্ব চিরকালই অপরিসীম৷ এই শহরের অলিতে-গলিতে ঐতিহ্যবাহী এমন অনেক কিছু রয়েছে, যার গুরুত্ব এবং মর্যাদা বর্তমান যুগেও সমানভাবে বিদ্যমান৷ মধ্য কলকাতার কলেজ স্ট্রিটে এমনই এক ঐতিহ্যবাহী শরবতের দোকান প্যারামাউন্ট৷ কেএফসি, ম্যাকডোনাল্ডস, পিৎজা হাটের যুগেও যার চাহিদা বিন্দুমাত্র কমেনি৷ ৯৪ বছরের পুরোনো এই বিখ্যাত শরবত প্রতিষ্ঠানে আজও সমানভাবে ভিড় জমাচ্ছেন, আট থেকে আশি প্রায় সকলেই৷
advertisement

প্যারামাউন্টের বিখ্যাত সেই ডাবের শরবত

১৯১৮ সালে কলেজ স্ট্রিট অঞ্চলের বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রিটে এই প্যারামাউন্ট শরবতের দোকানটি খোলেন স্বর্গীয় নীহাররঞ্জন মজুমদার৷ বাংলাদেশের বরিশালের বাসিন্দা নীহাররঞ্জনবাবু দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন৷ অনুশীলন সমিতির সদস্য ছিলেন তিনি৷ খাদ্যরসিক নীহাররঞ্জনবাবুর কাছে শরবতের অর্থ ছিল ‘আতিথেয়তা’৷ নিজের শখকে পূরণ করতেই কলকাতায় এসে এই দোকানটি খোলেন তিনি৷ বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় ছিলেন নীহারবাবুর অত্যন্ত কাছের মানুষ৷ তিনিই এসে নীহারবাবুকে প্রথম বলেন, ‘নীহার এমন একটা শরবত বানাও, যা খেয়ে তৃষ্ণাও মিটবে, আবার পেটও ভরবে৷’ ডাবের জল, শাঁস এবং সিরাপ দিয়ে তৈরি সেই ডাবের শরবত আজও সারা ভারতবর্ষে বিখ্যাত৷

advertisement

স্বাধীনতার বহু আগে থেকেই এই প্যারামাউন্টের শরবত খেতে আসতেন বহু বিখ্যাত মানুষ৷ নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, মেঘনাথ সাহা, জগদীশচন্দ্র বসু থেকে শুরু করে পরবর্তীকালে সত্যজিৎ রায়, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়, সুচিত্রা সেন, মনোহর আইচ, শঙ্খ ঘোষ- কে নেই সেই তালিকায়৷ রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় প্রায়ই আসতেন প্যারামাউন্টের শরবত খেতে৷ মৃত্যুর কিছুদিন আগেও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে এই প্যারামাউন্ট থেকে অর্ডার দিয়ে আনিয়েছিলেন তাঁর অলটাইম ফেভারিট ‘ম্যাঙ্গো শরবত’৷ ছ’য়ের দশক পর্যন্ত খসখস, চন্দন, ম্যাগনোলিয়ার মতো বিখ্যাত শরবত পাওয়া গেলেও বর্তমানে এগুলি আর পাওয়া যায় না দোকানে৷

advertisement

নীহাররঞ্জনবাবুর মৃত্যুর বহু বছর পরেও মজুমদার পরিবারের সকলে মিলেই এই শরবত প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন৷ দোকানের মালিক পার্থপ্রতিম মজুমদার জানান, ‘কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা তো আছেই, সেইসঙ্গে অবাঙালীদের মধ্যেও প্যারামাউন্টের শরবত খাওয়ার চাহিদা সবচেয়ে বেশি৷’ কলেজ স্ট্রিট অঞ্চলের স্কুল-কলেজ পড়ুয়ারাই অধিকাংশ সময় শরবত খেতে এই দোকানে ভিড় জমালেও, কলেজ স্ট্রিট অঞ্চলে কোনও কাজে গিয়েছেন, এমন অনেকেই কাজের ফাঁকে প্যারামাউন্টের শরবতের দোকানে একবার গলা ভিজিয়েই যান৷

advertisement

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
লালগোলাতে রাজরাজেশ্বরী রূপে পূজিতা হন মা কালী! দেওয়া হয় ইলিশের ভোগ
আরও দেখুন

পার্থপ্রতিমবাবু আরও জানান, ‘ ডাবের শরবতের পাশাপাশি সম্পূর্ন রাবড়ি দিয়ে তৈরি ‘প্যাশন ফ্রুটস’, ‘কোকো মালাই’ এবং সিরাপের মধ্যে ‘ট্যামারিন্ড সিরাপ’-এর চাহিদা সবচেয়ে বেশি৷ নিজের মনের মতো শরবত না পেলে মনঃক্ষুন্ন হন প্রত্যেকেই৷ তাই সারা বছরই প্যারামাউন্টপ্রেমীদের সেরা শরবতটাই দিতে আমরা বরাবর চেষ্টা করে থাকি৷’

বাংলা খবর/ খবর/কলকাতা/
বাঙালিকে শরবতে মজিয়ে রেখেছে শতাব্দীপ্রাচীন প্যারামাউন্ট
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল