সিপিএমের নেতা, কর্মী, সমর্থকেরা তৃণমূলকে হারাতে কার্যত বেপরোয়া। ভোট ভাগাভাগিতে যাতে শাসকদল কোনও সুবিধা নিতে না পারে তার জন্য একের বিরুদ্ধে এক প্রার্থীই চায় তাঁরা। এ দিকে সিপিএমের নির্দেশ। তাই 'সাপও মরে লাঠিও না ভাঙে' সেই নীতি নিয়ে বিজেপি নির্দল প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দিলে তা আটকানো অসম্ভব।
আরও পড়ুনঃ নদীতে রান্নার জল নিতে এসে আতঙ্কের চিৎকার! চিলাপাতা পিকনিক স্পট ঢাকল পুলিশে
advertisement
অন্যদিকে, তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে কোনও বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা যদি নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে পরে শাসকদলকে হারাতে বিক্ষুব্ধ প্রার্থীর দিকেও ভোট চলে যেতে পারে। দলের ভোট অন্যদিকে চলে গেলে আখেরে সিপিএমের ঝুলিই শূন্য থাকার আশঙ্কা করছে নেতৃত্ব।
সম্প্রতি আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানেই বেশ কয়েকটি জেলার নেতারা রাজ্য নেতৃত্বকে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিচুতলায় 'মহাজোটের' আশঙ্কার রিপোর্ট পেশ করেন। এই রিপোর্ট পাওয়ার পর রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কোনওভাবেই বিজেপির সঙ্গে জোট করা যাবে না। একইসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, বিজেপির সঙ্গে জোট করলে শাস্তি পেতে হবে।
আঞ্চলিক স্তরের বেশ কয়েকটি নির্বাচনে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে ঠেকাতে বিজেপির সাথে বামপন্থীদের সমঝোতার ত্বত্ত্ব সামনে এসেছে। এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনেও নিচুতলার সিপিএমের নেতা কর্মীদের মনভাবে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন জেলা নেতৃত্ব।
আরও পড়ুনঃ নামখানায় বাস থেকে নামতেই লুটিয়ে পড়লেন, গঙ্গাসাগরে এসে ভিনরাজ্যের প্রৌঢ়ের মৃত্যু
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশের মতে, গত লোকসভা নির্বাচনে 'আগে রাম পরে বাম' এই ত্বত্ত্বে বামেদের ভোট রামের দিকে চলে যাওয়ার প্রবনতা তৈরি হয়েছিল। যার ফলে রাজনৈতিক ভাবে অনেকটাই ধাক্কা খেয়েছিল সিপিআইএম। বিজেপি যার পুরো লাভ তুলেছিল। শূন্য হয়ে গিয়েছিল বামেরা। তারপর থেকে নেতৃত্ব পদক্ষেপ শুরু করে। একদিকে নিজেদের ভোট ফিরিয়ে আনার জন্য প্রচার, অন্যদিকে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি। এরপর থেকেই পরিস্থিতির বদল শুরু হয়।
শান্তিপুর থেকে শুরু করে বালিগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে বিজেপিকে সরিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসতে থাকে বামেরা। উৎসাহিত হয়ে লাগাতার কর্মসূচি শুরু করে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। করোনা পরিস্থিতিতে কাজ করে মানুষের মন পাওয়া রেড ভলান্টিয়ারদের কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে প্রার্থী করা থেকে ছাত্র-যুব থেকে তরুণ মুখ সামনের সারিতে নিয়ে আসা। কিন্তু নন্দকুমারে সমবায় নির্বাচনে তৃণমূলকে বেগ দিতে পারা রাম-বাম জোট বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের উৎসাহিত করেছে। যেটা 'নন্দকুমার মডেল' বলে পরিচিত হয়েছে। পঞ্চায়েতে সেই মডেল অনুকরণের হিড়িক পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে জেলার সিপিএম নেতারা। আর এত দিনের উদ্যোগে যে আশা দেখছিল, আলিমুদ্দিন তাতেও জল পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
Ujjal Roy