খাস কলকাতা শহরে ম্যানহোলে পড়ে মৃত্যু হয়েছে পঞ্চাশোর্ধ্ব এক ব্যক্তির। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটে দমদম সেভেন ট্যাঙ্কের কাছে। যা কলকাতা পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। ম্যানহোলের ঢাকনা খোলা থাকাতেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ মৃতের পরিবারের লোকজন এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের।
দমদমের বেদিয়াপাড়ার মৃত ব্যক্তি রঞ্জন সাহা। তিনি পেশায় অটোচালক। রবিবার তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল শোকস্তব্ধ পরিবেশ। রঞ্জনবাবুর বৃদ্ধা মা অবিরাম কেঁদে চলেছেন। মাত্র চার মাস আগেই স্বামী নারায়ন চন্দ্র সাহাকে হারিয়েছেন। সেই শোক কাটতে না কাটতেই এবার ছেলে হারানোর শোক। দুই সন্তান শাশুড়িকে নিয়ে বাকরুদ্ধ রঞ্জনবাবুর স্ত্রী।
advertisement
আরও পড়ুন- গরুর লাথিতে সূঁচ ফুটে বিরল রোগে আক্রান্ত রাজ্যের ৫ প্রাণীবন্ধু! অবস্থা আশঙ্কাজনক
শুক্রবার রাতের ঘটনায় মাথার উপর আকাশ ভেঙে পড়েছে সাহা পরিবারের। সংসারের একমাত্র রোজগেরে সদস্য বলতে শুধুই রঞ্জনবাবু। অটো চালিয়েই চলত সংসার। কিন্তু কী হবে এবার? প্রশ্ন আছে, উত্তর অজানা। বড় ছেলে পার্থ বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। ছোট ছেলে তৃতীয় শ্রেণীর। পড়াশোনা থেকে সংসার, কীভাবে চলবে? ভেবেই কূলকিনারা পাচ্ছে না সাহা পরিবার।
একদিকে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চেয়ে দোষীদের শাস্তির দাবিতে যেমন সরব, পাশাপাশি জীবন ও জীবিকার স্বার্থে বর্তমানে সরকারি সাহায্যের দিকেই তাকিয়ে রয়েছে গোটা পরিবার। এদিকে যে এলাকায় খোলা ম্যানহোলে পড়ে গিয়ে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে তার ঠিক পাশেই রবিবারও গিয়ে দেখা গেল, একটি ম্যানহোলের ঢাকনা খোলা। স্থানীয় কো-অর্ডিনেটর পুষ্পালি সিনহাকে এই ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'ম্যানহোলের ঢাকনা খোলা আছে কিনা জানি না। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।'
বিপদজনক ম্যানহোল প্রসঙ্গে স্থানীয় বস্তিবাসীদেরই দায়ী করে পুষ্পালি বলেন, বাসিন্দারা নিজেদের স্বার্থেই নোংরা আবর্জনা ফেলতে ম্যানহোলের ঢাকনা খোলেন। আমরা এবার নজর রাখব'। এদিকে ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার সকালে দুর্ঘটনাস্থলে বিক্ষোভ দেখায় বাম যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই। সংগঠনের নেতা গৌরব মজুমদার বলেন, এলাকায় এই ধরনের আরও অনেক বিপদজনক পথ রয়েছে। পুরসভার কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই'।
প্রসঙ্গত, যে খোলা ম্যানহোলে পড়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে সেটি সিমেন্টের স্ল্যাব দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে পুরসভার তরফে। তবে কার গাফিলতিতে এই মর্মান্তিক ঘটনা? পুরসভা ও পূর্ত দপ্তরের মধ্যে চাপান-উতোর চললেও ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও শাস্তির দাবিতে সরব সাহা পরিবার।